ধর্ষণের কারণেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে

gbn

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

রাজধানীর কলাবাগানের মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ এ তথ্য জানিয়েছেন। শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বিকালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথে ইঞ্জুরি পাওয়া গিয়েছে। তার বডি থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে সে মারা গিয়েছে। তার রক্তক্ষরণ হয়েছে যোনিপথ ও পায়ুপথ থেকে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সে ‘হাইপো ভোলেমিক’ শকে মারা গেছে।

 

মানুষের মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা দেহ থেকে অতিরিক্ত তরল বের হয়ে গেলে হৃদপিন্ড স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায় আর এ কারণে হৃদযন্ত্র শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে পারে না। এ কারণে মানুষ মারা যেতে পারে।

বিকৃত যৌনাচারের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বলেন, যোনিপথ ও পায়ুপথ দুই রাস্তা থেকেই আমরা রক্তক্ষরণের আলামত পেয়েছি। আমরা জোর জবরদস্তির কোনো আলামত পাইনি। তবে যোনিপথ ও পায়ুপথে কিছু ইনজুরি আমরা পেয়েছি। মূলত সেই ইনজুরিগুলোর জন্যই সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। কিন্তু বডির অন্য কোথাও জোরাজুরির কোনো আলামত পাইনি।

যৌনাচার দলগত ছিল কি না, এই বিষয়টি জানতে কাজ চলছে জানিয়ে সোহেল মাহমুদ বলেন, তার (মেয়েটি) বডি থেকে আমরা ডিএনএ সংগ্রহ করেছি। সেটি আমরা ল্যাবে পাঠিয়েছি। তার রিপোর্ট আসলে আমরা জানতে পারবো এটা গ্যাং রেপ ছিল কি না।

তিনি আরো বলেন, ত্যুর আগে চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে কিনা, তার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে ক্যামিক্যাল পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এসব রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে। রিপোর্টের জন্য সপ্তাহ দুয়েক অপেক্ষা করতে হবে।’

তিনি বলেন, পুলিশ সুরতহাল রিপোর্টে বয়স জানতে চেয়েছে। সে কারণে মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক্সরে বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে এক্সরে করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এক্সরে ছাড়াই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। শরীরের গঠন ও দাঁত দেখে বয়স নির্ধারণ করা হবে।

পরে স্বজনরা আনুশকার মরদেহ নিয়ে যান। তারা অভিযোগ করে জানান, জোরপূর্বক ধর্ষণ করেই মেরে ফেলা হয়েছে আনুশকাকে।

এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার বড় আনুশকা। মাস্টারমাইন্ড স্কুলে এবার মাধ্যমিক পরিক্ষার্থী ছিল সে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার গোপালপুর। তার মা শাহানুরী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কম্পিউটার অপারেটর আর বাবা আল-আমিন আহমেদ নবাবপুরের ব্যবসায়ী।

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মেয়েটিকে আনোয়ার খান মডার্ন কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, তাদের কাছে আনার আগেই মৃত্যৃ হয় মেয়েটির। এই ঘটনায় মেয়েটির বাবা ধর্ষণ ও হত্যার মামলা করেছেন, যাতে আসামি করা হয়েছে ফারদিন ইফতেখার দিহান নামে এক যুবককে। তিনি ‘এ’ লেভেলের ছাত্র।

আরো পড়ুন: চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে আনুশকাকে ধর্ষণ: জিজ্ঞাসাবাদে দিহান

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেলা ১১টার পর মেয়েটি কোচিংয়ের শিট আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। এরপর দুপুরের পর তার মায়ের মোবাইল ফোনে কল করেন দিহান। জানানো হয় মেয়েটি অচেতন হয়ে গেছে।

হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির মা জানতে পারেন তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। রাতেই মামলা করেন বাবা।

দিহানকে এর আগেই আটক করে পুলিশ। মামলা করার পর শুক্রবার বিকালে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তুলে রিমান্ডের আবদেন করা হয়। তবে দিহান ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলে আর রিমান্ড শুনান হয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, আদালতে দিহান মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন