জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
আবার ধাক্কা। এবার সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তৃতা এবং তার ঠিক পরেই ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেন মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রতিটি শাখার অফিসাররা। রীতিমতো চিঠি লিখে ওই দিনের ঘটনার নিন্দা করে তারা বলেছেন, ওই ঘটনা শুধুমাত্র অন্যায় নয়, আইনবিরুদ্ধ। যারা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, চিঠিতে তারা লিখেছেন, ট্রাম্প যা-ই দাবি করুন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন। তারা তাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে জাতীয়তাবাদী ট্রাম্পের সম্পর্ক খারাপ ছিল, এমন কথা শোনা যায়নি। বরং আফগানিস্তান এবং ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহার, ইউরোপ থেকে সৈন্য ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল মার্কিন সেনাবাহিনী। এবার সেই সেনাই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কেবল মুখই খুলল না, রীতিমতো চিঠি লিখে তাঁকে বিড়ম্বনায় ফেলল।
গত ৬ জানুয়ারি ট্রাম্প সমর্থকরা হামলা চালায় ক্যাপিটল ভবনে। সেখানে সে সময় জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল। সেনেটে যৌথ কংগ্রেস অধিবেশন চলছিল। ঠিক তখনই ক্যাপিটলের মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। তাঁদের কারো কারো সঙ্গে অস্ত্রও ছিল। ভিতরে ঢুকে সেনেট হলে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় তারা। শুধু তা-ই নয়, বেশ কয়েকজন সাংসদের অফিসও তছনছ করে তারা। পুলিশ বাধ্য হয়ে রায়ট পুলিশ ডাকে। গুলি চলে। চারজনের মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে অ্যামেরিকার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন হিসেবে চিহ্নিত হয় ৬ জানুয়ারি।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়। রিপাবলিকানরাও ঘটনার নিন্দা করেন। সাবেক প্রেসিডেন্টরা দলমত নির্বিশেষে ঘটনার নিন্দা করেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো সেনাবাহিনী। মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রতিটি শাখার চিফ অফ স্টাফেরা ওই চিঠিতে সই করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের আছে। কিন্তু প্রতিবাদের নামে সহিংসতার অধিকার নেই। এ কথা প্রত্যেক নাগরিককে মনে রাখতে হবে। যাঁরা ওই দিনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত। জো বাইডেনকেও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁরা স্বাগত জানান।
ক্যাপিটলের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল এক সাবেক এয়ারফোর্স অফিসারের। এয়ারফোর্সের ওই নারী ট্রাম্পভক্ত ছিলেন। সেনেট হলে ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছিলেন তিনি। বাধ্য হয়েই পুলিশ গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে সেই ঘটনার কোনো উল্লেখ নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, ওই ঘটনায় সরাসরি সেনাবাহিনীর নাম চলে আসাতেই দ্রুত বিবৃতি দিয়ে ঘটনার নিন্দা করলেন বাহিনীর তিনটি শাখার সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা।
এদিকে ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পেশ করেছেন কংগ্রেসের সাংসদরা। তাঁরা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছেও ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। সংবিধানের ২৫ তম অনুচ্ছেদ অনুসারে এ কাজ করতে পারেন পেন্স। তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এ কাজ তিনি করবেন না। ডেমোক্র্যাট তো বটেই রিপাবলিকান সাংসদদেরও একটি অংশ চাইছে, ২০ জানুয়ারির আগেই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ট্রাম্পকে অপসরণ করতে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন