মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭০ বছর পর কোনো ফেডারেল নারী বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। একাধিক মানবাধিকার সংস্থার আপত্তি সত্ত্বেও তা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বিবিসি জানায়, ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত দেড়টার দিকে ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের টেরে হাউটের কারাগারে প্রাণনাশক ইনজেকশন প্রয়োগ করে লিসা মন্টগোমেরি (৫২) নামের ওই নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ২০০৪ সালে মিসৌরিতে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিলেন লিসা। এরপর তার পেট কেটে বাচ্চা বের করে নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ফেডারেল আদালত লিসাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় লিসার ঠিক পেছনে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, শেষ কিছু বলার আছে কি না? কিন্তু লিসার উত্তর ছিল, না; মানে কিছুই বলার নেই। লিসার আইনজীবী কেলি হেনরি বলেন, ‘এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে যারাই অংশ নিয়েছেন তাদের সবারই লজ্জা পাওয়া উচিত।’ এক বিবৃতি তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একজন নারীকে মৃত্যু থেকে বাঁচানোর জন্য সরকার কিছুই করেনি। লিসা মন্টগোমেরির মৃত্যুদণ্ড ন্যায়বিচারের ধারেকাছে ছিল না।’ লিসার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দুবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। একবার করোনার কারণে, আরেকবার শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে দিয়েছিলেন এক বিচারক। লিসার মানসিক অবস্থা নিয়ে নতুন শুনানির আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী। লিসার পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীর দাবি, ছোটবেলায় বাবা কর্তৃক বারবার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন লিসা। এ ছাড়া মা তাকে অপহরণ করেছিলেন। ফলে অল্প বয়স থেকেই মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিলেন তিনি। অন্যদিকে নিহতের শিকার তরুণীর পরিবার ও বন্ধুরা জানাচ্ছেন, এই হত্যাকাণ্ড এতটা ভয়াবহ ছিল যে মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনা নির্বিশেষে লিসার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া উচিত। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে লিসার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সর্বশেষ ১৯৫৩ সালে কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল মার্কিন সরকার। বনি হেডি নামের ওই বন্দীকে মিসৌরিতে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন