দেশের প্রথম পেশাদার নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে এ আলোকচিত্রী বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
সাইদা খানম ১৯৩৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও লাইব্রেরি সায়েন্সে মাস্টার্স করেন। বিখ্যাত বেগম পত্রিকার মাধ্যমে সাইদা খানম আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তার ছবি ছাপা হয় অবজারভার, ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। আলোকচিত্রী হিসেবে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবিতে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেন। চন্দ্র বিজয়ী প্রথম তিন নভোচারীর ছবিও তুলেছেন তিনি।
দেশের বাইরে ভারত, জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, পাকিস্তান, সাইপ্রাস ও যুক্তরাষ্ট্রে তার তোলা ছবির বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয়। জাপানে ইউনেসকো অ্যাওয়ার্ড, অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার, বেগম পত্রিকার ৫০ বছর পূর্তি পুরস্কার, বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সম্মানসূচক ফেলোসহ বিভিন্ন স্বীকৃতি পান তিনি।
ছবি তোলার পাশাপাশি লেখালেখি করতেন সাইদা খানম। তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘ধূলোমাটি’, ‘স্মৃতির পথ বেয়ে’, ‘আমার চোখে সত্যজিৎ রায়’। তিনি বাংলা একাডেমি ও ইউএনএবির আজীবন সদস্য ছিলেন। ২০১৯ সালে আলোকচিত্রে অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন সাইদা খানম।
দেশের প্রথম পেশাদার নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানমের ইন্তেকালে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক শোক বার্তায় নেতৃদ্বয় মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
তারা বলেন, সাইদা খানম তার ক্যামেরায় ধারণ করেছেন সময় আর মানুষের মুখ, ইতিহাস আর জীবনের আখ্যান। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রহাতে প্রশিক্ষণের যে ছবি ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, তিনিই তা ক্যামেরায় ধারণ করেছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন