শ্রমিক-কর্মচারিদের নেতা আলাউদ্দিন মিয়া। যার হাতে যেন রয়েছে আলাদিনের চেরাগ। অবসরে যাবার পরও তাকে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার বেলায় যেনো উদারহস্ত বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। কি তার শক্তির উৎস জাতির জানতে চায় বলে দাবী করে মানবন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাঁরা প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানের দুটি গাড়ি প্রায় একযুগ ধরে ব্যবহার করেছেন। এর চালকের বেতন, তেল ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বহন করেছে তাঁদের প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে সরকারের কোটি টাকাও বেশি ক্ষতিসাধনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন। এই অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করলেও অদৃশ্য কারণে তারা এখনও ধরা ছোয়ার বাইরে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “পিডিবির সিবিএর শীর্ষ নেতা মো. আলাউদ্দিন মিয়া গংদের অবৈধ ক্ষমতা ও দাপটের উৎস জাতি জানতে চায়”-শীর্ষক বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত মানবন্ধন কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা'র সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ জলিল, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, এনডিপির ভাইস চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ, ন্যাপ ভাসানী সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, আর্ন্তজাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুজ্জামান, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব এ্যাড. সাইফুলইসলাম সেকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আল আমিন, জাতীয় জনতা পার্টিও যুগ্ম সম্পাদক আমির হোসেন, নারী নেত্রী এলিজা রহমান প্র্রমূখ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, সিবিএর এই নেতার সম্পদের অনুসন্ধানও করছে দুদক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনেক দিন ধরে সিবিএর নেতৃত্বে থেকে বোর্ড প্রশাসনের ওপর খবরদারি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশে এখন শুধু ‘উল্টে পাল্টে দে মা, লুটেপুটে খাই’ অবস্থা চলছে। লুটপাটের কারণে বিদ্যুত সেক্টরে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের লুটের অর্থ যোগাতে বার বার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগনকে ভোগন্তিতে ফেলা হয়। সিবিএ নেতা নামধারি আলাউদ্দিন মিয়ার মত লুটেরাদের লুটপাট আর দুর্নীতির দায় জনগন কেন বহন করবে।
তিনি বলেন, ভর্তুকির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা এভাবে তুলে দেওয়া হচ্ছে লুটেরাদের হাতে। কয়েকদফায় এর মাশুল দিচ্ছে সাধারণ মানুষ: একবার করের টাকা দিয়ে অপ্রয়োজনীয় ভর্তুকির মাধ্যমে, আরেকবার ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধে বাধ্য হয়ে। ভর্তুকির এই অর্থ অন্য কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয়িত হতে যে পারছে না, সেটাও আরেক ক্ষতি। অনিয়ম ও দুর্নীতির ভারে আক্রান্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, দুর্নীতির দায়ের বরখাস্ত, দুদকের চার্জসিটভুক্ত আসামী আলাউদ্দিন মিয়া সরকার সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি হন কি করে? কারা এই সকল দুর্নীতিবাজদের প্রতিষ্ঠিত করছে ? কারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে ?
তিনি বলেন, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত চার্জসিট ভুক্ত আসামী হওয়া সত্যেও কিভাবে জাতীয় শ্রমিক লীগের মত সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি হল জাতি জানতে চায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতি বিরোধী সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে কারা এই দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় প্রশয় দিচ্ছে দেশের সচেতন নাগরিকেরা জানতে চায়।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন