বাইডেন-কমালাকে অভিনন্দন বাংলাদেশের

মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ সদ্য দায়িত্বগ্রহণকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ স্বাক্ষরিত অভিনন্দন বার্তা পাঠানো হয়েছে ওভাল হাউস বরাবর আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত পৃথক অভিনন্দন বার্তা গেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের দপ্তর হোয়াইট হাউসে। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত এম. শহীদুল ইসলাম রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের ৩ অভিনন্দন বার্তা হোয়াইট হাউসে হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি নজিরবিহীন নিরাপত্তা এবং নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন এবং ৪৯তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমালা হ্যারিস শপথগ্রহণ করেন। মার্কিন নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরপরই ডেমোক্রেট দলীয় বিজয়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার রানিংমেট কমালা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছিল ঢাকা। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বরাবর পাঠানো বার্তায় প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ লিখেছেন- ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের আনন্দময় খবরে আপনাকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আপনার মাধ্যমে বন্ধুপ্রতীম যুক্তরাষ্ট্রের সর্বস্তরের জনগণের কাছেও অভিনন্দন পৌঁছে দিচ্ছি। বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কয়েক দশক ধরে অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক বিরাজমান উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ লিখেন- আমি আশা করি আপনার বৈচিত্র্যপূর্র্ণ নেতৃত্ব দু’দেশের বিদ্যমান সম্পর্ককে আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।  আমি এই শুভক্ষণে আপনাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আশা করি উভয়ের সুবিধাজনক সময়ে আপনি ঢাকা সফর করবেন। আপনার সফরটি কেবল মাত্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার পথে সহায়ক হবে বিষয়টি এমন নয় বরং এই উপলক্ষে আপনি বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নতি দেখতে পাবেন, যা অর্জন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। আমাদের জাতির পিতা ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যের অভিশাপ থেকে জনগণকে মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি (তার কন্যা শেখ হাসিনা) সেটি (স্বপ্ন) বাস্তবায়নের পথেই হাঁটছেন। অভিনন্দন বার্তায় প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য, সর্বাঙ্গীন সাফল্য ও সুখী-সমৃদ্ধ জীবন কামনা করেন।  প্রেসিডেন্ট জোসেফ আর বাইডেন জুনিয়রকে লেখা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আপনাকে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন অংশীদার এবং বিশ্বস্ত বন্ধু। দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি আশা করি, আপনার আমলে বিদ্যমান এই অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় (হাইয়ার ট্র্যাজিক্ট্রি) পৌঁছাবে। দুই দেশের জনগণের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো গভীর করতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি লিখেন- আমাদের অভিন্ন চাওয়া- জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই এবং বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান সংকটের একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছানো। যার মধ্য দিয়ে নিরাপদ এবং উন্নত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী লিখেন- অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জনকল্যাণমুখী আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, সামাজিক সুরক্ষা এবং আইসিটি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার বার্তায় বাইডেনকে উদ্দেশ্য করে লিখেন- আপনি জেনে থাকবেন বাংলাদেশ এ বছর স্বাধীনতার অর্ধশত বছর এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে। এই শুভলগ্নে আমি আপনাকে এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনকে ঢাকা সফরের সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। নিজস্ব প্রচেষ্টা, জনগণের শক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতার সমন্বয়ে বাংলাদেশ যে অভাবণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা সচক্ষে দেখার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের শান্তি, উন্নতি, সমৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং সুখী-সমৃদ্ধ জীবন কামনা করেন।  ওদিকে পৃথক বার্তায় ৪৯তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়া প্রথম নারী, যার শিকড় উপমহাদেশে গ্রথিত সেই কমালা হ্যারিসকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে তিনি লিখেন- আপনার দায়িত্বগ্রহণের মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার, জনগণ এবং ব্যক্তিগতভাবে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র কার্যকর অংশীদারিত্বের সুফল উপভোগ করছে। এই সম্পর্ক প্রতিনিয়ত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আপনার যোগ্য নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং অতুলনীয় অভিজ্ঞতা আমাদের দ্বিপক্ষীয় চমৎকার সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার পথকে প্রশস্ত করবে, নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। আমাদের উভয়ের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনেও এটি সহায়ক হবে। অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনা লিখেন- আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাকে জানাচ্ছি যে, এ বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে। এই শুভ মুহূর্তে আমি আপনাকে (কমালা হ্যারিস) এবং ডগলাস এমহোপকে (তার স্বামী) বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের অসাধারণ অগ্রগতি দেখতে ঢাকা সফরে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বার্তার সমাপনীতে কমালা হ্যারিস, তার পরিবার সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন