মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ
নিউইয়র্ক পুলিশের প্রথম দক্ষিণ এশীয় লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান শামসুল হক। এনওয়াইপিডিতে গোয়েন্দা স্কোয়াডে যুক্ত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার কুইন্সে এনওয়াইপিডির পুলিশ একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার অভিষেক হয়। তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় লেফটেন্যান্ট শামসুল হক বলেন, আমি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পদোন্নতি পেয়েছি। তবে এই পদে ভবিষ্যতে আরও অনেক বাংলাদেশি থাকবে বলে আমি আশাবাদী। লেফটেন্যান্ট শামসুল হকের এই বিরাট সাফল্যের জন্য বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে থাকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। জানা গেছে, ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে শামসুল হক এনওয়াইপিডিতে যোগদান করেন। তখন মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১০ সালে তাকে সার্জেন্ট পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। ২০১৪ সালে তাকে লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পান। এবং তিনি এনওয়াইপিডির অভিজাত অভ্যন্তরীণ বিষয়ক তদন্ত গ্রুপে যোগদান করেন। শামসুল হক ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এখানে এসে তিনি বাস-বয়, ডেলিভারিম্যান, ম্যানেজারসহ নানা চাকরি করেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান। শামসুল হক ১৯৯৭ সালে অর্জন করেন ডিপ্লোমা ডিগ্রি। পরে লাগার্ডিয়া কলেজ থেকে এএস এবং বারুক কলেজ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেন। বারুক কলেজে অধ্যায়নকালে তিনি সিএনইওয়াই ট্রাস্টির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন। পরে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। লেফটেন্যান্ট শামসুল হক বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জের বাঘার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত আবদুল মুসাব্বির এবং মা প্রয়াত নুরুন নেছা। স্ত্রী রুবিনা হক ও দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি নিউইয়র্কের কুইন্সে বসবাস করছেন। তার সব ভাই-বোনও নিউইয়র্কে থাকেন। লেফটেন্যান্ট শামসুল হক জানান, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মুসলমানদের দোষারোপ করার পর তিনি পুলিশ বিভাগে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। এনওয়াইপিডিতে যোগদানের পর বুঝতে পারেন যে, এ বিভাগে আরও বেশি সংখ্য বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রয়োজন। এ বিষয়ে তিনি বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আমেরিকান অফিসারকে আহ্বান জানান। তাদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) নামের একটি সংগঠন। তিনি সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংগঠনটি শত শত বাংলাদেশিকে এনওয়াইপিডিতে নিয়োগে সহায়তা করে। বর্তমানে এনওয়াইপিডিতে প্রায় ৪০০ পুলিশ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা, সার্জেন্ট, ৩ জন লেফটেন্যান্ট এবং ৩ জন অধিনায়ক রয়েছেন। এ ছাড়া এনওয়াইপিডি দ্বারা নিযুক্ত সহগ্রাধিক ট্রাফিক এজেন্ট রয়েছেন।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন