জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ছাত্রী ফারাহ মাধুরীকে (২২) ধর্ষণের আলামত মেলেনি বলে জানিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আ ম সেলিম রেজা। এখনও পর্যন্ত ওই ছাত্রীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এছাড়াও দেহের সংবেদনশীল অংশগুলোতেও জোরপূর্বক সঙ্গমেরও আলামত পাওয়া যায়নি।
এর আগে ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ ওঠে তারই তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফরেনসিক চিকিৎসক ডা. সেলিম রেজা বলেন, ‘রোববার রাতে মেয়েটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে তার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এমনকি শারীরিক সম্পর্কের কোনো আলামত মেলেনি। এরপরেও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে সেহেতু তার ভ্যাজাইনাল সোয়াব সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে তার যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ থেকে আলামত সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টে এবং অন্যান্য নমুনা নিয়ে ভিসেরা টেস্টের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ওগুলো ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর মদ্যপানে মৃত্যু হয়েছে কি না সেটা জানতে ক্যামিক্যাল টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর বাইরে কিডনির নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে।’
ডা. সেলিম রেজা বলেন, ‘মরদেহের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এছাড়াও দেহের সংবেদনশীল অংশগুলোতেও জোরপূর্বক সঙ্গমের আলামত পাওয়া যায়নি।’
তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনই কিছু বলতে পারছেন না তিনি। সেলিম রেজা বলছেন, ‘ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
ইউল্যাবের ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাটি জানা যায় রোববার রাতে; যদিও তিনি মারা যান এদিন সকালে। রাতেই এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয় মোহাম্মদপুর থানায়। সেখানে ওই তরুণীকে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার কথা বলা হয়েছে। এতে সহযোগী হিসেবে ৪ জনের কথা বলা হয়।
এ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের একজন আরাফাত। এই আরাফাতও মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর মামলার দুই আসামি মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসিরকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
মামলায় যা অভিযোগ করা হয়েছে
ইউল্যাবের ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর রোববার রাতেই মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রীর বাবা। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে অধিক মাত্রায় মদপান করান। মদ্যপানের একপর্যায়ে তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাত নামে একজনের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিলেন। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রবিবার তরুণী মারা যান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন