চাল-ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশির ভাগ পণ্যের মূল্য ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার বাজার সিন্ডিকেটের কাছে হার মেছেন বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, সিন্ডিকেট বরাবর অধরাই থেকে যায়। সরকারের কর্তাব্যক্তিরা যতই বলেন বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেবেন, ততই তারা আরও সংহত হয়।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে "নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির প্রতিবাদে ও চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে" জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি-জেএসপি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যকে এখন আর ‘পাগলা ঘোড়া’ বলা যায় না, এটা এখন ‘পাগলা হাতি’তে পরিণত হয়েছে। উন্মাদের হাতে আগুন যেমন বিধ্বংসী, তেমনই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। অর্থনীতি, সমাজনীতি, বাজারনীতি কোনো কিছুই ধার ধারছে না নিত্যপণ্যের বাজার এবং এর ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, চাহিদা ও জোগানের যে সূত্র- চাহিদা বাড়লে মূল্য বাড়বে, মূল্য বাড়লে সরবরাহ বাড়ে, সরবরাহ বাড়লে মূল্য কমে- অর্থনীতির এসব কেতাবি তত্ত্ব বাংলাদেশের বাজারে অচল মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি আমাদের এখানে কিছু অসাধু সিন্ডিকেটের হাতে দুর্বৃত্তপনা তথা অপরাধের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তাদের ইচ্ছা-খুশির গিলোটিনে বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারের প্রতিটি জিনিসের- চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা থেকে শাকসবজি পর্যন্ত মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই অসাধু অপরাধী সিন্ডিকেট শুধু জনগণকেই নয়, জিম্মি করে ফেলছে সরকারকেও। সরকার সংকট সামাল দিতে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তারা সেটা মানছে তো নাই-ই, উপরন্তু কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতারিত করছে সবাইকে।
তিনি বলেন, ‘চোরায় না শোনে ধর্মের কহিনী’- তার আলামত শুরু হয়েছে চাল ও ভোজ্যতেলের মূল্যে। ‘কারও সর্বনাশ’কে পুঁজি করে কিছু লোক নিজেদের জন্য ‘পৌষ মাস’ তৈরির নির্লজ্জ প্রয়াসে লিপ্ত হয়। মানুষের দুর্যোগ এবং দুঃসময়ে তার মাথায় বাড়ি দিয়ে, কোমর ভেঙে দিয়ে আখেরে যে লাভের গুড়কে পিঁপড়ের খাদ্যে পরিণত করা হয় সেটা অতিমুনাফাখোর সিন্ডিকেটের তথাকথিত ব্যবসায়ী নামধারী মজুদদাররা বোঝে না। কারণ তাদের মধ্যে না আছে মানবতা, না আছে দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ।
জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি (জেএসপি)'র চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু'র সভাপতিত্বে ও মহাসচিব জয় প্রকাশ নারায়ন রক্ষিতের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম (বিএসএএফ) প্রধান সমন্বয়ক মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, জেএসপি'র ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন ডা. বিধান কুমার মিত্র, চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ গুহ প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন