নজরুল ইসলাম ll
দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স মেন। এ যেন না জেনে না বুঝে মৌমাছির মৌচাকে কে হাত দিয়েছে। দেশ এবং বহির্বিশ্বে কোটি কোটি প্রাইম মিনিস্টার'স মেন গর্জে উঠেছে। পাঠক, অদ্য বাংলাদেশকে নিয়ে আল জাজিরা যে প্রতিবেদনে করেছে তা নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশের পারতারা করছি। প্রথমে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ জেনে নেই।
বাংলাদেশ নিয়ে আল- জাজিরার অনুসন্ধানী এই প্রামাণ্য চিত্রে ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার চেস্টা করেছে। এই অনুসন্ধানে মূলত সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের পরিবারের সদস্যদের বর্তমান অতীত কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে "অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স মেন। প্রায় এক ঘণ্টার এই প্রতিবেদনে মূলত বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং তার তিন ভাই-এর কার্যক্রম দেখানো হয়েছে। যেখানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের আপন তিন ভাই ২০০৪ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হয়েছিল। এই ভাইদের মধ্যে আনিস আহমেদ এবং হারিস আহমেদ বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তৃতীয় ভাই, তোফায়েল আহমেদ জোসেফ, যিনি হত্যার অপরাধে কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হন। প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ঢাকাতে একটি বিয়ের অনুস্টানে উপস্থিত ছিলেন। যদিও দুই ভাই হারিস আহমেদ এবং আনিস আহমেদ পলাতক, হারিস আহমেদ এবং আনিস আহমেদকে জেনারেল আজিজ আহমেদের ছেলের বিয়েতে দেখা গেছে। প্রতিবেদনে দেখানো হয় আনিস আহমেদ থাকেন কুয়ালা লামপুরে আর হারিস আহমেদ আছেন হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে। গোপন রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে বুদাপেস্ট-এ হারিস আহমেদের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। প্রতিবেদনে কুয়ালালামপুরে হারিস আহমেদ এবং আনিস আহমেদের বাড়ির তথ্য দেখানো হয়েছে। নাম পরিবর্তন করে হাসান মোহাম্মদ বিভিন্ন দেশে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেছেন। বুদাপেস্টে একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সাথে এক কথোপকথনে তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বুলেট সরবরাহের কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। আল জাজিরার ঐ প্রতিবেদনে হারিস আহমেদকে বলতে শোনা গেছে পুলিশের চাকরি, যেমন থানার ওসির পদ, পেতে কত টাকা নেয়া হয়। অদ্য তা প্রচার করার পর এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা চলছে।
প্রতিবেদনটি নিয়ে জ্ঞানী গুনীদের বিশ্লেষণ ও নিজে কয়েক বার দেখার পর সন্দেহ উড়িয়ে দিতে পারছি না যে, প্রতিবেদনটি মিথ্যা মানহানিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডার মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা। কেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হল একটু পরে পয়েন্ট আউট করছি।
পাঠক, সামাজিক মাধ্যমে আমার অনেক ফেসবুক বন্দু আছেন, যারা দেশের সমসাময়িক ঘটনা রঠনা নিয়ে তাদের সুচিন্তিত জ্ঞানগর্ভ মতামত ব্যক্ত করেন। যা থেকে আমার জানার ও শেখার সুযোগ হয়, its a opportunity of social media. অদ্য আল জাজিরা বাংলাদেশ নিয়ে যে অনুসন্ধানী প্রামাণ্য প্রতিবেদন করেছে এ ব্যপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে আমার-ই এক ফেসবুক বন্দু লিখেছেন ----
ইহা (দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স মেন) সাম্প্রতিককালে আল জাজিরার সবচেয়ে দুর্বল স্ক্রিপ্ট। যে রকম হেন-তেন করে শুরু করেছিলো, মাঝখানে বার্গম্যান ঢুকিয়ে, নয়টা গুলির এনিমেশন করে কোনটা প্রমান করলো সেটাই বোধগম্য নয়। দেশে দুর্নীতি হয় এটা বোঝানোর জন্য এতো কষ্ট করে সিনেমা বানানো লাগে? জাল পাসপোর্ট আর এন আই ডি করতে সেনাপ্রধান লাগে? এরা থাকে কোন দুনিয়ায়! যারা এরকম ড্রামা এই প্রথম দেখেছেন এবং উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছেন তারা রিয়েল লাইফ স্টোরি ইনভেস্টিগেটিভ ডুকুমেন্টারি গুলো দেখে নিবেন।
পাঠক, আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন যে, আল- জাজিরা বিশ্ব গণমাধ্যমে নানা কারণে বিতর্কিত এবং সমালোচিত। চ্যানেলটি ফেক নিউজ, জঙ্গী গোষ্ঠীকে মদদ দেয়া সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। এই চ্যানেলটি বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করে ধিকৃত হয়। প্রতিবেদনটি নিয়ে যে কারণে সন্দেহ দানা বেঁধেছে আপনাদের সাথে একটু শেয়ার করতে চাই। প্রথমত: নাম বিক্রি করে অনিয়ম বানিজ্য আমাদের দেশে নতুন কিছু বলে মনে করছি না, তবে ইহা সমর্থনযোগ্য না। হ্যারিসের মত শত শত ভন্ড প্রতারক লোক দেশে বিদেশে আছে যারা এই সব ক্রিয়া কর্মের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন সাহেদ, ড. সাবরিনা, জি কে শামিম আরো অনেক। আপনাদের মনে আছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রি বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া হাওয়া ভবনে এই ধরনের প্রতারনা বানিজ্য শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছেন।
এই রিপোর্ট কেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হল একটু পয়েন্ট আউট করছি।
🔘সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাইয়েরা যদি এতই শক্তিশালী, তাহলে ওরা পলাতক কেন?
🔘জাল পাসপোর্ট ,আর এন আই ডি করতে কি বাংলাদেশে সেনাপ্রধান লাগে?
🔘সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ কি এতই বোকা যে, তিনি একটি অন্যায় কাজে সম্পৃক্ত হয়ে ই'মেইলে নিজের পরিচয় লিখে দিয়েছেন।
🔘ই'মেইলের সেন্ডার রিসিভার না দেখিয়ে মধ্যভাগের লেখাকে হাইলাইট করে যে ড্রামা বানানো হয়েছে তা অনুসন্ধানী রিপোর্টের ফাউন্ডেশন নড়বড়ে করে দিয়েছে ।
🔘 সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাই যদি এতই ক্ষমতাবান, তাহলে কেন শেখ হাসিনার শাসনের ১৪ বছর তাকে জেলে থাকতে হলো
🔘হ্যারিস বলেছে, তার কথায় দেশের মন্ত্রিরা নাকি নাচে, আল-জাজিরা প্রমান করতে পারেনি তাদের রিপোর্টে কোন মন্ত্রি কখন কোথায় নেচেছেন। হ্যারিস বললেই তো হবে না।
🔘প্রতিবেদনটিতে প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের অন্যান্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে এই নির্দিষ্ট ব্যক্তির সম্পর্কের কোনো প্রমাণ নেই।
🔘একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেল মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ ব্যক্তির কথার ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সংজ্ঞাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে।
পাঠক, এই প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সরকারিভাবে ঘোষিত মৃত্যুর সংখ্যা চ্যালেঞ্জ করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ দোষী সাব্যস্ত করেছিল। তিনি আল-জাজিরা ঘোষিত একজন ‘সাইকোপ্যাথ’ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধী। একজন অপরাধী কেমন করে দুর্নীতির প্রতিবেদন তৈরি করেন প্রশ্ন উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এই প্রতিবেদন পরিকল্পনা প্রস্তুতি ও প্রচারের জন্য তারা যে সময় টাকা ব্যয় করেছে, ফান্ড কোথা থেকে আসলো সেই প্রশ্ন অবান্তর না। বিএনপি-জামায়াত এই টাকার ব্যবস্থা করেছে তা নিয়ে মানুযের মুখে খই ফুটছে। পাঠক, "ঘরের শত্রু,"শত্রুর সাথে বসবাস, বাংলা সিনেমার নাম শুনেছেন ? দেশ বিরোধী এমন কল্প কাহানী তৈরিতে সাহায্য পেতে ষড়যন্ত্রকারীদের কোনোই অসুবিধা হয়নি।
ডেভিড বার্গম্যান ছিলেন যুক্তরাজ্যের একজন সাংবাদিক। তিনি কয়েক বছর আগে বিলেতে এক টেলিভিশন চ্যানেলে বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের ওপর প্রামাণ্যচিত্র করার সময় সেখানকার বাঙালি মহলের কাছে পরিচিত হন।
এরপর ড. কামাল হোসেন তনয়া ব্যারিস্টার সারা হোসেনের স্বামী হিসেবে তিনি বাংলাদেশে আসার পরপরই জামায়াতি যুদ্ধাপরাধীদের সংস্পর্শে এসে তাদের সুরেই গান গাইতে শুরু করেন। শুরু করেন যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাংবাদিকতা। অব :বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ডেভিড বার্গম্যানের শ্বশুর ড. কামাল তাঁর স্ত্রী সারা হোসেনকে এমনভাবে প্রভাবিত করেন যে, ড. কামাল, যিনি ১৯৭৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সাজা দেওয়ার জন্য আইন প্রণয়নের সময় বঙ্গবন্ধুর একজন মন্ত্রী ছিলেন, সেই ড. কামাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়ের সময় মুখে কুলুপ দিয়ে পরোক্ষভাবে তাদের পক্ষই অবলম্বন করেন।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ডেভিড বার্গম্যান জামায়াতিদের দ্বারা এতই প্রভাবিত হন যে, আপিল বিভাগে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার আপিল শুনানিকালে তিনি আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকাকালে আমি সেই মামলার একজন বিচারপতি হিসেবে তাঁকে আদালত থেকে বের করে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। ডেভিড বার্গম্যানের ষড়যন্ত্র চলতে থাকে জামায়াতিদের সঙ্গে। পরবর্তী সময়ে একপর্যায়ে তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হলে তিনি লন্ডন ফিরে গিয়ে জামায়াতি নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাক, যিনি দেশে থাকাকালে যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন, তাঁর সঙ্গে মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জোট সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য অশুভ তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকেন।
পাঠক, Global pandanic করোনা নিয়ে যারা বাংলাদেশে প্রপাগন্ডা ছড়ায়, ভেকসিন নিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছড়ায়, ভাষ্কর্য নিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছডিয়েছে, চাঁদে যারা সাইদিকে দেখেছিলো তাদের জন্য আল জাজিরার অ্যাকশন ড্রামাটি বিশ্বস্থ গ্রহণযোগ্য এবং আনন্দের খোরাকও বটে। বাংলাদেশের মানুষ দেশ বিরোধীদের এসব প্রপাগন্ডায় প্রথমে একটু বিভ্রান্ত হয় পরে যখন সত্য বের হয়ে আসে তখন বিভ্রান্তি কেটে যায়।
পাঠক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে, এ আন্দোলনে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে আমারা রুখে দাড়াবো। দুর্নীতি একটি দেশ ও জাতীর সকল উন্নতির অন্তরায়। এডওয়ার্ড গ্রিফিন বলেছেন, সরকারের দুর্নীতির বিরোধিতা করা দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ। একি সাথে দেশ বিরোধী যড়যন্ত্রে ও আমাদের সজাগ থাকতে হবে। দুর্নীতি বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় সমস্যা। দেশের উন্নয়ন দারিদ্র্য বিমোচন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, সুশাসন ও সার্বিকভাবে ইতিবাচক সমাজ পরিবর্তনের পথে দুর্নীতি প্রতিবন্ধক। এই বিষয়ে স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী সহ দেশের আপামর জনসাধারন একমত। সরকার পরিবর্তন করলে দুর্নীতি বিলীন হয়ে যাবে এই সুত্র বিশ্বাস করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে যারা উন্মাদ,তাদের মতলব কোথায় সেই হিসাব মিলাতে সুত্রের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে যারা ক্ষমতা, রাজনীতি, জনসমর্থন সব হারারে অনেকটা ভিখারী সেজেছেন তাদের কাছে এই মুহূর্তে ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই।
পাঠক, কোনো দেশের পক্ষেই শতভাগ দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়, তবে সরকারের একটা দায়িত্ব হলো এই দুর্নীতি প্রতিরোধ করা, যাতে এটি দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা র্ব্যক্ত করেই আসছেন। বলেছেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং এর অর্জনসমূহ সমুন্নত রাখতে দুর্নীতি বিরোধী লড়াই অব্যাহত বিকল্প নেই। দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদক নির্মূলের ক্ষেত্রে সরকারের যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে হবে। এ যাবৎ দল ও দলের বাইরের অনেক রাঘব বোয়ালদের আইনি প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে আরো যোগপযোগী স্বচ্চ করার বিকল্প দেখছি না।
পাঠক, দেশ স্বাধীনের পর বহুকাল বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ ছিল উপেক্ষিত। বাংলাদেশের কথা উঠলেই ‘বটমলেস বাস্কেটের’ তুলনা করা হতো। হাসিনা সরকার দেশের এই দুর্নামটি শুধু দূর করে দেশটির অর্থনীতি ও উন্নয়নের চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাংক এখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে। বাংলাদেশ এখন বহির্বিশ্বে একটি আলোচিত দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এ দেশটির গুরুত্ব এখন স্বীকৃত।
হাসিনা সরকারের এ সাফল্যের কথা দেশের বিএনপি-জামায়াত ও তথাকথিত সুশীল সমাজ স্বীকার করতে চাইবে না। তবে ইহা সত্য যে, প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা সব শত্রু ও সমালোচকের মুখে ছাই দিয়ে তিন তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশ পরিচালনা করছেন। সরকার দেশকে রাজনৈতিক সন্ত্রাসমুক্ত করেছে। মৌলবাদী হিংস্রতা দমন করেছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একই সঙ্গে ভারত, চীন, আমেরিকা, রাশিয়া প্রভৃতি দেশের সঙ্গে মৈত্রী ও সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করেছে, বিশ্বরাজনীতিতে বাংলাদেশ তার একটি সম্মানজনক স্থান করে নিয়েছে, অতীতের কোনো সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনো সুনামই অর্জন করতে পারেনি। আর এই কারনেই জনবিচ্ছিন্ন বিএনপির রাজনীতির বড় মূলধন এখন মিথ্যাচার, বাগাড়ম্বর।
সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই তা বলব না। দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় শত্রু দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার। দুর্নীতি দমন সাম্প্রদায়িকতার মূলোচ্ছেদ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিকতা সত্ত্বেও সফলতার লাইন ক্রস করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। যে দেশের মানুষের রক্তের সাথে দুর্নীতি অন্যায় অনিয়ম মিশে আছে সে দেশে সরকার পরিবর্তন করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নহে।
আমাদের নীতি নৈতিকতায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
পাঠক, শেয করতে হবে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ আল- জাজিরা এমন একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে নিজেকে ‘হিংসাত্মক রাজনৈতিক নকশার হাতিয়ার হওয়ার সুযোগ দিয়েছে, যা বাংলাদেশকে ব্যথিত করেছে।
লেখক: জার্নালিস্ট, ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) লন্ডন, মেম্বার, দি ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি ইউনাইটেড কিংডম।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন