জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘কাং’ টুর্নামেন্টে খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ মণিপুরি কাং ফেডারেশনের আয়োজনে আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন গ্রামে কাং শং স্থানে গত জানুয়ারি ৩০ তারিখ এ টুর্নামেন্টে শুরু হয়।
ফাইনাল খেলা অনুষ্টিত হবে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার)।
জানা যায়, বাংলাদেশের বসবাসরত মণিপুরি সম্প্রদায়ের বাইরে আসাম, মিজোরাম, ত্রিপুরার, মণিপুর মতো রাজ্যের জায়গায় এই খেলার খুব প্রচলন রয়েছে। খেলাটি পরিচিতি পেয়েছে মায়ানমার, থাইল্যান্ডে সহ আরো কয়েকটি প্রান্তে। কিন্তু জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ক্রীড়ামহলে ওই খেলা এখনও স্বীকৃতি পায়নি। তা আদায়ের লক্ষ্যেই এখন লড়তে চাইছে ‘কাং’ খেলার সঙ্গে সম্পৃত্ত সংস্থাগুলি। মণিপুরীদের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলার নাম ‘কাং খেলা’।
ইতিহাসের সেই প্রাচীন কাল থেকেই মণিপুরী সমাজে কাং খেলার প্রচলন ছিল। প্রাপ্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য মতে দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ভারতের মণিপুরে রাজত্বকারি রাজা লোইতোংবার শাসনামলে এই ‘কাং খেলা’র উদ্ভব।
মণিপুরি কাং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইবুংহাল সিংহ শ্যামল ও নিংতম কাং টুর্নামেন্ট ২০২১ এর সদস্য সচিব সমরেন্দ্র বলেন, এ বছর কাং টুর্নামেন্টে মণিপুরি সম্প্রদায়ের পুরুষদের ৮টি দল ও মহিলাদের ৫ দল অংশগ্রহন করছেন। প্রতি শুক্রবার পুরুষ ও প্রতি শনিবার মেয়েদের এই খেলা হয়।
তারা আরো বলেন, নীতি-নিয়ম যুক্ত হয়ে কাং খেলা একটি আধুনিক ক্রীড়ার রূপ পরিগ্রহ করে। কাং খেলার প্রধান উপকরণ ‘কাং’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে হাতির দাঁত, কচ্ছপের বুকের খোল, মহিষের শিং দিয়ে তৈরি কাং। ১৮৫১ সালে মহারাজ চন্দ্রকীর্ত্তি সিংহ মণিপুরের রাজসিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন।
তিনি কাং খেলার জন্য নির্দিষ্ট কোর্ট তৈরি করা, দল গঠন প্রক্রিয়া এবং খেলার নিয়মাবলী সুনির্দিষ্ট করে এই খেলাটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। কাং খেলা ছড়িয়ে পড়ে মণিপুরের সর্বত্র। সময় পরিক্রমায় বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত কাং খেলার নিয়মাবলীতে বা কাং হিসেবে ব্যবহৃত ক্রীড়া-উপকরণের আকার বা প্রকৃতিতেও কিছু কিছু ভিন্নতা দেখা দেয়। ০১৭১১৯০৮৬১৪
কাং খেলায় বিশেষজ্ঞ রাজ কুমার সিংহ জানায়, ১৯৯৭ সাল থেকে নিয়মিত ওই খেলা হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলায়। এ বছরও কংশং নয়াপত্তন গ্রামে কাং খেলার আসর হচ্ছে । এই খেলায় প্রতিটি দলে ৭ জন করে খেলোয়াড় থাকেন। পুরুষ ও মহিলা যৌথ দল হতে পারে। পৃথক দল গঠন করা যায়। ৭টি সরল রেখায় উভয় দলের ৭ জন করে খেলোয়াড় পরষ্পরের বিপরীতে থাকেন। দু’জন আম্পায়ার খেলা পরিচালনা করেন। ক্রিকেট খেলার স্কোরবোর্ডের মতো কাং খেলার স্কোরবোর্ড থাকে। মসৃণ কোর্টে কাং এক ধরনের ফাইবারের তৈরি প্লেট বিপক্ষের খেলোয়াড়দের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হয়। তাই এ খেলার ফাইনাল হবে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন