জিবি নিউজ ||
মৌলভীবাজারের রাজনগরে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষে পুলিশ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতিসহ উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। আহতদের রাজনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। ওই সভা সফল করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজনগরে মিছিল করা হয়।
ওই মিছিল শেষে সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিপক্ষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিষোদ্গার করা হয়। এর প্রতিবাদে গতকাল মিছিল করতে সকালে রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খানের কার্যালয়ে তার অনুসারীরা জড়ো হয়। এর পাশেই আগামী ১৬ তারিখের সমাবেশ সফল করার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হন।
হঠাৎ করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং ইটপাটকেল ছোড়া হয়। উভয়পক্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে রাজনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ ১০৩ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ও ৪ রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। উভয়পক্ষের ছোড়া ইটপাটকেল ও পুলিশের রাবার বুলেটে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতরা হলেন- উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খান (৪৫), মামুন আহমদ (২০), শরিফ মিয়া (২৫), ইয়ামিন আহমদ (৩৩), রমজান মিয়া (৩৩), রিয়াদ আহমদ (২৩), তারেক মিয়া (২৫), জালাল আহমদ (৩২), লিকন মিয়া (২৮), সেজু আহমদ (২৮), ইউসুফ আহমেদ (২৬), ফাহিম আহমদ (২৪), সাইম মিয়া (২০), রাজন মিয়া (২৫), পার্থ দাস (৪০), পরকিছ মিয়া (৬০), রিপন মিয়া (২২), রিয়াদ মিয়া (২২), পুলিশের এসআই এরশাদ, কনস্টেবল পবিত্র ও সুব্রতসহ অন্তত ৩০ জন।
রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বখত্ বলেন, আগামী ১৬ তারিখ উপজেলা আওয়ামী লীগের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। এ সময় বিএনপি-জামায়াতের সহায়তায় উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের ওপর হামলা চালান। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার সময় দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাও তাদেরকে সহায়তা করেছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বখতের নেতৃত্বে মিছিল করে। এ সময় আমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করে তারা। বিষয়টি জেনে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা গতকাল দুপুর ১টার সময় মিছিল আয়োজন করেছিল।
এ সময় মিলন বখতের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার সরকারি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এতে তারেক নামে আমার একজন কর্মী ঘাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেখানে অবস্থান করছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন