কমলা-ওবামা-হিলারি ত্রয়ীর বাণে বিদ্ধ ট্রাম্প

সপ্তাহখানেক ধরেই তার নাম নিয়ে চর্চা চলছে বিশ্ব রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দলের ভার্চুয়াল সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলেন। বক্তৃতায় রিপাবলিকানদলীয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তথা দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্টকে তুমুল আক্রমণ করেছেন।

একইসঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম নারী হিসেবে ইতিহাস গড়ে তিনি বলেছেন, আমাদের দুঃখকে তিনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। জো বাইডেন ক্ষমতায় এলে আমাদের সবাইকে একত্রে বেঁধে রাখবেন। সেই সঙ্গেই ট্রাম্প প্রশাসনের নাম না নিয়ে কমলা বলেছেন, ‘জাতিবিদ্বেষের কোনো প্রতিষেধক হয় না।’

 

গত সোমবার থেকে ডেমোক্র্যাটদের চার দিনের মহাসম্মেলন শুরু হয়েছে। করোনা-পরিস্থিতিতে গোটাটাই হচ্ছে ভার্চুয়ালি। গত পরশু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক হাত নিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। কাল একসঙ্গে কমলা, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি তথা দেশের সাবেক বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন ট্রাম্পকে নিশানা করে নিজেদের আক্রমণ শানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প কতটা ব্যর্থ সেই উদাহরণই সকলের সামনে তুলে ধরেছেন তারা।

কমলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদের দল ক্ষমতায় এলে আমেরিকায় সব জাতি-বর্ণের মানুষ সমানাধিকার পাবেন। এই প্রসঙ্গে গত মে মাসে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের অত্যাচারে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু এবং তার পরবর্তী প্রতিবাদ-আন্দোলনের কথাও বলেছেন কমলা।

তবে ট্রাম্পকে আক্রমণ করার পাশাপাশি কিছুটা ভারাক্রান্তও শুনিয়েছে ৫৫ বছরের এই ডেমোক্র্যাট নেত্রীকে। জানিয়েছেন, মা শ্যামলা গোপালনের কথা মনে পড়ছে তার। এই দিনটা যে তার মা দেখে যেতে পারলেন না, সেই আফসোস কোনও দিনও যাবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এবারের নির্বাচনে এশীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন কমলা। ট্রাম্পের আমলে দেশের অর্থনীতি যে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, এখন তো আমাদের তিনটে জিনিসের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। অতিমারি, অর্থনীতি আর জাতিবিদ্বেষ।

কমলার পরেই ছিল ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার বক্তৃতা। কার্যত নজিরবিহীন ভাবে নিজের উত্তরসূরিকে আক্রমণ করতে শোনা গিয়েছে ওবামাকে। বিদ্বেষের প্রসঙ্গ টেনেছেন তিনিও। ট্রাম্পের আমলে ইহুদি-শিখেদের মতো সম্প্রদায়ের ধর্মাচরণে ব্যাঘাত ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন ওবামা।

আরও বলেছেন, চার বছর আগে রিপাবলিকানরা যখন ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিত্বকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করেছিলেন, ভেবেছিলাম এই পদের গুরুত্ব ও মর্যাদা বোঝার মতো কেউ আসছেন। কিন্তু না, আমি ভুল ছিলাম। ট্রাম্প আগেও এই দায়িত্বের গুরুত্ব বোঝেননি। এখনও বোঝেন না।

একদিকে ওবামা এবং কমলা যখন একত্রে ট্রাম্পকে বিদ্ধ করছেন, ট্রাম্পও একের পর এক টুইট করে তাদের দু’জনকে আক্রমণ করে গিয়েছেন। কেন ওবামা গোড়া থেকেই বাইডেনের হয়ে গলা ফাটাননি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। গোড়ার দিকে কমলা যখন নিজে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন, একটি বিতর্ক সভায় বাইডেনের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। সে নিয়েও কমলাকে একপ্রস্ত কথা শুনিয়েছেন ট্রাম্প।

ওবামার উদ্দেশে তিনি টুইটারে লিখেছেন, আমার প্রচারে উনি চরবৃত্তি করতে গিয়েছিলেন। আর ধরাও পড়ে যান।

এখানে অবশ্য ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারের প্রসঙ্গ তুলেছেন ট্রাম্প।

গত নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারিও ব্যঙ্গ করে বলেছেন, আশা করি আমেরিকার মানুষ এত দিনে বুঝতে পেরেছেন, যে এই নির্বাচনটা আর পাঁচটা বছরের মতো নয়।

ট্রাম্পও অবশ্য হিলারিকে আক্রমণের সুযোগ ছাড়েননি। হিলারিকে ভয়াবহ নেত্রী আখ্যা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন