ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত

gbn

সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||

উপমহাদেশের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী ও ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হল। 

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী ও ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সাহিত্য পুরষ্কার-২০২১ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড.এম,এ, ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি এ,কে,এম, ফরহাদুল কবির।  বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি হাজী এম এ রহিম, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন, কানাডা প্রবাসী কবি সৈয়দা ফরিদা রহমান, সংগঠনের স্থায়ী সদস্য সৌরভ কুমার সাহা, কাশিমিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি পীরজাদা আলহাজ্ব ইলিয়াস ফারুকি প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রফেসর ডা. মিজানুল হাসান এবং সভাপতিত্ব করেন ডা. মির্জা নাহিদা হোসেন বণ্যা। 

অনুষ্ঠাতটি সঞ্চালনা করেন সৈয়দা হাবিবা মোস্তারি চমন । 

অনুষ্ঠান শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। 

এদিকে, ওয়াজেদ মিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুর মহানগর এবং তাঁর জন্মস্থান লালদীঘি ফতেহপুরে ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরিক দলগুলো এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলো স্মৃতিচারণা, ফাতেহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণসহ বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সকাল নয়টায় পীরগঞ্জের ফতেপুরে ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। বাদ জোহর কারামতিয়া জামে মসজিদে মিলাদ ও মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত। সন্ধ্যা ছয়টায় রংপুর টাউন হলে আলোচনা সভা ও প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণুবিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী। ১৯৪২ সালের এই দিনে (১৬ ফেব্রুয়ারি) তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই মেধাবী বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে মারা যান। ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

ওয়াজেদ মিয়া ১৯৫৬ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্রসংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর স্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। বঙ্গবন্ধুর দুই  কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মতোই তিনিও ’৭৫-পরবর্তী সামরিক শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হন। 

প্রয়াত এই বিজ্ঞানী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থবিজ্ঞান, ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ নামের আরেকটি গ্রন্থ ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়। মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন