ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব: প্রধানমন্ত্রী

 জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন গড়ে তুলেছি, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত করার জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশের প্রেক্ষাপটে জাতির উদ্দেশে শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। এ সময় তার পাশে বসা ছিলেন তার বোন শেখ রেহানা।

 

বিকেল চারটায় শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এই ভাষণ ও প্রশ্নোত্তর পর্ব সরাসরি সম্প্রচার করে।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন গড়েছি, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়াও আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্বটাও আমাদের পালন করতে হবে। যেন শিশু থেকে শুরু করে যুবক থেকে শুরু করে কেউ যেন বিপথে যেতে না পারে বা কোনো অসামাজিক কার্যকলাপ অথবা কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত হতে না পারে। এমন কোনো কাজ যেন না করে যেটা দেশের জন্য ক্ষতি হয়, দেশের মানুষের জন্য ক্ষতি হয়। সেজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়া একান্তভাবে অপরিহার্য।

এই আইনের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, সমালোচনা যারা করেছে, তারা করবেই। কারা সব থেকে বেশি সমালোচনা করছে? তারা কি বাস্তব কথাটা একবার উপলব্ধি করছে? তারা তো তা করছে না। আমার বয়স ৭৫ বছর। স্কুল জীবন থেকে রাস্তায় নামি। ৬২ সাল থেকে পথে পথে মিছিলে মিছিলে যোগ দিয়েছি। কাজেই এ দেশের সবাইকে আমার চেনা আছে।

কারও নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, কারও মৃত্যু কাম্য নয়। কিন্তু সেটাকে কেন্দ্রে করে একটা অসেন্তোষ সৃষ্টি করাও কাম্য নয়।

এই প্রসঙ্গে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানায় চার জাতীয় নেতাকে নির্মমভাবে হত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সে রকম ঘটনা তো আর ঘটেনি। যারা সেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদের সাথেও তো অনেকেই ঘাঁটছাড়া বেঁধেছিল। তবে কারও মৃত্যু কাম্য নয়। কেউ অসুস্থ হলে মারা গেলে কী করার আছে।

আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের যে অভিযোগ উঠেছে, সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কোনো সতর্কবার্তা থাকবে কি না?

উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, আইন তো আপন গতিতে চলে। আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে কি না, সেটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। কোনটা আপনার কাছে অপপ্রয়োগ, কোনটা অপপ্রয়োগ না, এটা একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। কিন্তু আমি তো মনে করি আইন নিজের গতিতে চলছে এবং চলবে। যদি কেউ অপরাধ না করে তার বিচারে শাস্তি হবে না। কিন্তু আদৌ অপরাধ হচ্ছে কি না, কিংবা এমন কোনো কাজ করছে কি না, যেটা দেশের ক্ষতি হচ্ছে, জনগণের ক্ষতি হচ্ছে, সে কাজ থেকে বিরত করার জন্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট।

সংবাদ সম্মেলনে ‘আজকে একটা শুভ দিন’ উল্লেখ করে এ বিষয়ে বেশি কিছু আর বলতে চাননি প্রধানমন্ত্রী।

কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরার ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রতিবেদন নিয়ে আরেক সাংবাদিকের প্রশ্নে শেখ হাসিনা শুরুতেই বলেন, তার কিছু বলার নেই। আমার কোনো প্রতিক্রিয়াও নাই, কিছু বলারও নাই। একটা চ্যানেলে কী বলছে না বলছে, সেটা দেশের মানুষ বিচার করবে। কতটুকু মিথ্যা, কতটা বানোয়াট, তারা বিচার করবে।

আল জাজিরার প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে অতীতে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ, ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোলাচালান মামলা এমনি ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যামামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিবার যুক্ত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার এড়াতে ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির কথাও বলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, যুদ্ধাপরাধ, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার বিচারের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, যাদের বিচার হয়েছে, তারা-তাদের পরিবার কি চুপ করে বসে থাকবে? তাদেরও কিছু ইন্ধন আছে। সেই সাথে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা অদ্ভুত কিছু মিথস্ক্রিয়া দেখা যায়। আল্ট্রা লেফট-আল্ট্র রাইট মাঝে মধ্যে এক হয়ে যায়! বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা চায় নাই, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, যারা গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে, আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। যারা এই দেশটাকে অস্ত্রো চোরাকারবারি, ড্রাগ চোরাকারবারি, দুর্নীতির একটা আখড়ায় পরিণত করেছে তারা বাংলাদেশের উন্নতিটা মানবে কিভাবে বলেন। তারা বদনাম করার চেষ্‌টা করছে। কোন চ্যানেল কী বলল না বলল, সেটা শুনে তো আমার রাজনীতি না। দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, সেটাই আমার রাজনীতি। যারা বলতে থাকছে বলতে থাকুক। বলতে থাকাই তো তাদের কাজ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন