সোনিয়া গান্ধীই কংগ্রেসের সভাপতি

গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ নয়, সোমবার (২৪ আগস্ট) দিনভর নানা জল্পনার পর ৭৩ বছর বয়সী কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধীর ওপরই আপাতত ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। সংগঠনের মধ্যে টালমাটাল অবস্থা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল কংগ্রেসের অন্দরমহলে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শতাব্দী প্রাচীন এই দলটির নেতৃত্ব বদল এবং কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন দাবি করে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি পাঠান। যার মধ্যে আবার রয়েছেন বর্তমান সাংসদ, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের একাংশ।

সোমবার সকালে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। বৈঠকে সোনিয়া ছাড়াও ছিলেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, সাবেক কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ.কে.অ্যান্টনি, কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিক, আনন্দ শর্মা, গুলাম নবি আজাদ, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংসহ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে সকলেই পূর্ণ সময়ের জন্য ‘দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য’ সভাপতির দাবি জানান।

 

এসময় বৈঠক থেকেই দলের অন্তবর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের অনুরোধ জানান সোনিয়া। নিজের পদ ছাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি) সাধারণ সম্পাদক কে.সি.বেণুগোপালের কাছে একটি নোটও জমা দেন সোনিয়া। কিন্তু সোনিয়াকেই সভাপতি থাকার অনুরোধ জানান মনমোহন সিং।

সোমবার সন্ধ্যায় ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই সর্বসম্মতভাবে স্থির হয় যে দলের অন্তবর্তীকালীন সভাপতি হিসাবে আগামী ছয় মাস সোনিয়া গান্ধীই কার্যভার চালাবেন এবং এই সময়ের মধ্যেই দলের নতুন সভাপতিকেও নির্বাচিত করা হবে।

বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা কে.এইচ.মুনিয়াপ্পা জানান, ওয়ার্কিং কমিটিতেই সহমত পোষণ করা হয়েছে যে ম্যাডাম সোনিয়া গান্ধীই দলের নেতৃত্ব প্রদান করবেন এবং শিগগির নির্বাচনও হবে।

সাবেক সভাপতি রাহুলের একটি মন্তব্য ঘিরে বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন চেয়ে ২৩ নেতার চিঠি প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী বলেন, যে সময় সোনিয়া অসুস্থ, যে সময় কংগ্রেস রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের সরকার বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে, তখন কেন এই চিঠি লেখা হল। যারা চিঠি লিখেছে, তাদের সঙ্গে নিশ্চয়ই বিজেপির যোগাযোগ আছে।

রাহুলের মন্তব্যের প্রতিবাদে গুলাম নবি আজাদ বলেন, বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ প্রমাণিত হলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। এমনকি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা এবং ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দেবেন বলে জানান তিনি।

আরেক নেতা কপিল সিব্বল বৈঠক চলাকালীনই টুইটারে দলের অন্তর্বিরোধের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

লেখেন, ‘রাহুল গান্ধী বলছেন আমাদের সঙ্গে বিজেপির আঁতাত রয়েছে। রাজস্থান হাইকোর্টে কংগ্রেসকে রক্ষায় সাফল্য পেয়েছি। মণিপুরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দলের লড়াইয়ে সঙ্গ দিয়েছি। গত ৩০ বছর বিজেপির সমর্থনে একটা কথাও বলিনি। তবুও বিজেপির সঙ্গে আমাদের আঁতাত!’ কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য টুইটটি তুলে নেন তিনি।

এদিকে ২৩ নেতার চিঠির খবর প্রকাশ্যে আসার পর কংগ্রেসের অন্দরে অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো অবস্থা। তবে রোববার চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই গান্ধী পরিবারের প্রতি নিজেদের আনুগত্য প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের প্রায় সব স্তরের নেতা। এছাড়া ভারতের চার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে রাহুল-সোনিয়াকে সমর্থন করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন