অতিত অস্বীকার করে সঠিক ইতিহাস নির্মান করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নির্মানে যারা যা অবদান তার স্বীকৃতি দেয়া উচিত। শুধু ৭ মার্চ বা ২৬ মার্চই স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস নয়। স্বাধীকার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নির্মানে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোরাওয়র্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তৎকালিন ছাত্র নেতা আ.স.ম. আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজসহ যার যা অবদান তাঁর স্বীকৃতি দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে ‘২মার্চ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস স্মরণে’ স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন নাগরিক কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ এক দল বা এক ব্যক্তির অবদান নয়। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের বাকে বাকে অনেক নায়ক মহানায়ক রয়েছে লাল-সবুজের এই পতাকা নির্মানে। যদিও আজ স্বাধীনতার সকল ইতিহাস ছিনতাই করার অপচেষ্টা চলছে। বিবেকবর্জিত, চাটুকার আর সুবিধাবাদি বুদ্ধিজীবী নামধারীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ইতহাসকে বিকৃত করছে। অন্যদিকে অন্ধ দলীয় আনুগত্যের কারনেও ইতিহাস বিকৃত করছে কেউ কেউ।
নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী'র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, কুমিল্লা বিভাগীয় সমন্বয়কারী কৃষক মো. মহসিন ভুইয়া, বিশিষ্ট সাহিত্যিক কবি মানসুর মোজাম্মিল, আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুজ্জামান, নারী নেত্রী খালেদা ফেরদৌস, কাজী শাহনাজ মিনু প্রমুখ।
এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, ১৯৭১ সালে ২ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের ভূখন্ডে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা। পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর শোষণ আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে তৎকালীন ডাকসু নেতাদের উদ্যোগে সেদিন সাড়া দিয়েছিলেন আমজনতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে ছাত্র-জনতার বিশাল সমাবেশে তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আব্দুর রব স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন রাষ্ট্রের উচিত সেজন্য তাঁকে স্বীকৃতি দেয়া।
সভাপতির বক্তব্যে এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস যদি সঠিক ও নির্মোহভাবে নির্মাণ করতে ব্যর্থ হই তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছ থেকে আমরা মুক্তি পাবো না। তাই জাতি হিসাবে আমাদের উচিত সকল কৃতিত্ব নিজেদের ভান্ডে জমা করার প্রবণতা বাদ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা। ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা বজায় রেখে ফয়দা লুটার যে চেষ্টা করছে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন