ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: সংসদ ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি নূরদের

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করলে সারা দেশে সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। এছাড়া এই আইন বাতিল না হলে জাতীয় সংসদ ঘেরাও করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, এই আইন বাতিল এবং গ্রেপ্তারদের মুক্তি দিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ। এই সময়ের মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকিও দেন সংগঠনগুলোর নেতারা।

 

বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের আয়োজনে শুক্রবার বিকেলে শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সকলের নিঃশর্ত মুক্তি ও এই আইন বাতিলের দাবিতে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এই ঘোষণা দেন নুর।

সমাবেশে তিনি বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়েছিল ছাত্র জনতার আপোষহীন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এবং শহিদ জয়নাল সিপাহী, ডা. মনোয়ার হোসেনের রক্তের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। মুশতাকের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। আজকের মুশতাকের রক্তের মধ্য দিয়ে এ সরকারের পতন হবে।

পুলিশ বাহিনীসহ প্রশাসনকে লক্ষ্য করে নুর বলেন, আপনারা বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ প্রধান এবং সিভিল সোসাইটির লোকেরা সরকার কে ‘না’ বলে সাধারণ জনগণের সঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়ুন, জনগণের সঙ্গে থাকুন।

পত্রিকার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ৭২ শতাংশ সাংবাদিক তাদের পেশা পরিবর্তন করতে চান এবং ৪২ শতাংশ সাংবাদিক মানসিক বিষন্নতায় ভোগেন। তার কারণ হলো মিডিয়া হাউজে গিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা বসে থাকে। যারা অনুসন্ধানী ও সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করে তাদের জামাত-শিবির আখ্যা দিয়ে চাকরিচ্যুত করতে গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তদবির চালায়। আজ মিডিয়া চালাচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।

তিনি বলেন, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকার পতনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাঁশেদ খান, যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান, মশিউর রহমান, মাহফুজুর রহমান খান, যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক হোসেন, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া, শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা আরমান হোসেনসহ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।

প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম: এদিকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং এই আইনে গ্রেপ্তারদের মুক্তি দিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ। শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ’র ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই আল্টিমেটাম দেন সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে সংবাদ সম্মেলন করে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন প্রিন্স, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, উদীচির সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, মশাল মিছিলে আটক সাত শিক্ষার্থীর আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা লিপি প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এই আইন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নয়, বরং এটি লুটেরা নিরাপত্তা আইন। কারণ এই আইনে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী ও দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। এজন্য অনতিবিলম্বে এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। এসময় তারা নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং এই আইনে গ্রেপ্তারদের মুক্তি দিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। এই সময়ের মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে সংবাদ সম্মেলন করে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এসে শেষ হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন