রাজপরিবারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন হ্যারি-মেঘান

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য যা বিরল, অপরাহ উইনফ্রে শো-তে তা-ই করেছেন প্রিন্স হ্যারি এবং ডাচেস অব সাসেক্স মেঘান। রাজপরিবারের বিষয়ে কথা বলেছেন সরাসরি। ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য ব্রিটিশ মিডিয়ার সমালোচনাও করেছেন তারা।

ডাচেস অব সাসেক্স মেঘানের প্রতি ব্রিটেনের ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলোর আচরণের সমালোচনা করে ২০২০ সালের ব্রিটিশ রাজপরিবার ছেড়ে স্বাধীন জীবন যাপন শুরু করেন তারা। তারপর থেকে নানা কারণে খবরে এলেও রাজপরিবার সম্পর্কে কখনো সরাসরি কথা বলেননি হ্যারি এবং মেঘান। রবিবার প্রচারিত অপরাহ উইনফ্রো শো-তে অবশেষে চমকে দেয়ার মতো অনেক কথাই বললেন তারা।

 

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেসিটো অঞ্চলের বাসিন্দা হ্যারি-মেঘান দম্পতি। সেই সুবাদে অপরাহ উইনফ্রের প্রতিবেশীও তারা।

মেঘানকে নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়ার লাগাতার খবর পরিবেশনের প্রসঙ্গে উঠে আসে বিয়ের অনুষ্ঠানে ডাচেস অব ক্যামব্রিজ কেট-কে বিয়ের অনুষ্ঠানে কাঁদানোর খবরের বিষয়টি। অভিযোগ অস্বীকার করে খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেঘান। এ সময় অপরাহ-ও এমন কিছু শিরোনাম পড়ে শোনান যাতে কেট এবং মেঘানের বিষয়ে মিডিয়ার ‘দ্বৈত নীতি’ স্পষ্ট।

তবে সাক্ষাৎকারভিত্তিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানটির এবারের পর্বে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে রাজপরিবার সম্পর্কে মেঘান আর হ্যারির বক্তব্য।

রাজপরিবারে বাক স্বাধীনতা এক প্রশ্নের জবাবে মেঘান বলেন, রাজ পরিবার আর প্রতিষ্ঠানটিকে (রাজতন্ত্র) যারা চালান, তারা সম্পূর্ণ আলাদা দুটি সত্তা। তিনি জানান, তার প্রতি রানির আচরণ সবসময়ই খুব চমৎকার। তবে অপরাহ যখন জানতে চান রাজপরিবারে নীরব থাকতেন, নাকি নীরব থাকতে বাধ্য করা হতো, সরাসরি জবাব না দিয়ে মেঘান শুধু বলেন, ‘দ্বিতীয়টি।’

হ্যারি-মেঘানকে রক্ষায় নিষ্ক্রিয়তা মেঘান দাবি করেন, ‘আমাকে আর আমার স্বামীকে রক্ষা করার জন্য সত্যি কথা বলার ইচ্ছা তাদের (রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের) ছিল না।’

এ সময় হ্যারি জানান, রাজপরিবার ছেড়ে আসার পর তার বাবা প্রিন্স চার্লসকে ফোন করলেও তিনি ধরতেন না। এখন অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে আর তাই সন্তানের সঙ্গে বাবা ফোন করে আবার কথা বলেন বলেও জানিয়েছেন হ্যারি।

এসব বিষয়ে হ্যারির অবশ্য কোনো অভিযোগ নেই। তিনি মনে করেন, তার বাবা এবং ভাই, অর্থাৎ প্রিন্স চার্লস এবং প্রিন্স উইলিয়াম আসলে ‘জালে আটকে গেছেন’।

হ্যারি-মেগানের প্রেম উপাখ্যান বন্ধুদের মাধ্যমে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে পরিচয় হয় মার্কিন টিভি অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের। ব্রিটিশ সিংহাসনের বর্তমান ষষ্ঠ দাবিদার প্রিন্স হ্যারি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মেগান জানান তাঁদের পরিচয়, প্রণয়ে রূপ নিয়েছে, ১০ মাস পর তা পরিণত হয় পরিণয়ে।২০১৯ সালের ৬ মে। তবে নিজেদের প্রথম সন্তানের নাম এখনো ঠিক করেননি মেগান-হ্যারি।

মা বেঁচে থাকলে খুশি হতেন হ্যারি মনে করেন, তার আর মেঘানের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তা দেখলে তার প্রয়াত মা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়ানা ‘খুব রেগে যেতেন, ভীষণ দুঃখ পেতেন।’ হ্যারি আরো জানান, ২০২০ সালে রাজ পরিবারের সদস্য হিসেবে প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা কমিয়ে দেয়া হয়, তখন শুধু মায়ের উত্তরাধিকার হিসেবে প্রাপ্য টাকাটাই পেয়েছেন তিনি।

রাজ পরিবারে বর্ণবাদ রাজ পরিবারে পরোক্ষ বর্ণবাদের বিষয়টিও উঠে আসে মেঘানের কথায়। ডাচেস অব সাসেক্স জানান, প্রথম সন্তান কতটা কালো হতে পারে এ নিয়ে পরিবারের কেউ কেউ বেশ চিন্তায় ছিলেন। তবে তারা কারা তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি। এ সময় অশ্বেতাঙ্গ পারিবারিক অতীতের কারণে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তাকে নিয়ে যে ‘বর্ণবাদী প্রতিবেদন’ প্রকাশিত হয়েছে, সেসব বিষয়ে পরিবারের কেউ কিছু না বলায় হতাশাও ঝরেছে মেঘানের কণ্ঠে।

আত্মহত্যার দোরগোড়া থেকে ফেরা রাজপরিবারে থাকার সময় ভয়ংকর চাপে মানসিকভাবে প্রায় ভেঙে পড়েছিলেন মেঘান। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে জানান, এক সময় আত্মহত্যাই মনে হয়েছিল একমাত্র সমাধান, ‘আমি তখন আর বাঁচতে চাইছিলাম না।’ অপরাহ উইনফ্রে শো-তে মেঘান আরো জানান, তখন মানসিক স্বাস্থ্যের বিপর্যয়ের কথা জানিয়ে রাজপ্রাসাদের সহযোগিতাও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেউ তার কথায় কান দেয়নি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন