জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
ব্রিটেনকে বলা হয় মাদার অফ ডেমোক্রেসী এবং মানবতার দেশ। সবার সমান অধিকার । যোগ্যদের যথাযথো মূল্যায়ন করা হলেও ধর্ম, বর্ন, জাতি, দেশ ভেদে রয়েছে অনেক বৈষম্য যা হয়তো খালি চোখে বিচার করা খুবই দু:স্বাধ্য।এর মধ্যে বেতন বৈষম্যে বাংলাদেশীরা সবার শীর্ষে। সবচেয়ে কম বেতনে কাজ করছে বাংলাদেশীরা।
কাজের ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষের বেতনে রয়েছে পার্থক্য তেমনি কাজের ক্ষেত্রে শরীরের রং বা কালারে রয়েছে বেতনের পার্থক্য এমনটাই প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (ওএনএস) এই জরিপে।
পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের বাইরে জন্মগ্রহণ করা নাগরিকরা ব্রিটিশ কর্মীদের চেয়ে কম বেতন পেয়ে আসছেন। একই সময় একই ধরনের কাজ করে শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের তুলনায় বাংলাদেশি বা পাকিস্তানিরা ২০ দশমিক ১ শতাংশ কম বেতন পাচ্ছেন। এই পার্থক্য লন্ডনে সবচেয়ে বেশি। সেখানে স্থানীয় শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে অন্যদের বেতনের পার্থক্য ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর একজন ব্রিটিশ কর্মী এক ঘণ্টায় গড়ে ১২ দশমিক ০৩ পাউন্ড মজুরি পেয়েছেন। সেখানে একজন বাংলাদেশি পেয়েছেন ৯ দশমিক ৬০ পাউন্ড। অপরদিকে পাকিস্তানিরা পেয়েছেন ১০ পাউন্ড করে। শুধু তাই নয়, এই দুই দেশের নাগরিকদের কাজ পাওয়ার হারও কম।
বর্তমানে ব্রিটেনে যাওয়া বাংলাদেশিদের ৫৪ দশমিক ৯ শতাংশ কাজ পাচ্ছেন। পাকিস্তানিদের ক্ষেত্রে এই হার ৫৮ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে রেজুলেশন ফাউন্ডেশন জানিয়েছিল, গত বছর ব্রিটেনে অবস্থানরত মোট ১৯ লাখ কৃষ্ণাঙ্গ, ভারতীয়, পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি কর্মীরা ৩২০ কোটি পাউন্ড জরিমানা দিয়েছেন।
রতিবেদনে দেখা গেছে, এই বৈষম্য সবার ক্ষেত্রে একরকম নয়। চীনা বা ভারতীয় কর্মীরা ব্রিটিশদের কাছাকাছি বেতন পাচ্ছেন। অন্য দেশের তরুণরাও এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। যেমন ১৬-৩০ বছর বয়সী বাংলাদেশিদের সঙ্গে ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গদের বেতনের হারে পার্থক্য ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
৩০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ওএনএস বলছে, এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীরা তুলনামূলক ভালো পারফরম্যান্স করছে। গবেষক ক্যাথেলিন হেনেহান জানান, গত এক দশকে ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ এবং অন্য জাতির নাগরিকদের পড়ালেখা ও কর্মসংস্থানের হার বেড়েছে। কিন্তু বেতন বৈষম্য রয়ে গেছে।
সরকারের উচিত এখনই এদিকে নজর দেয়া বিশেষ প্রয়োজন।পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশীরা সব চেয়ে কম বেতনে কাজ করছে। এর মূল কারন শুধুই ভাষাগত সমস্যা , নিজেদের সরলতা, প্রাপ্য আদায়ে যথাযথ ভূমিকা না নেওয়া তা নয়। ভিতরে ভিতরে শরীরের রং কে ও দায়ী করা যেতে পারে। কেননা সমান যোগ্যতা নিয়ে একই ধরনের কাজ করেও বাংলাদেশী হওয়ায় বেতন কম পাচ্ছেন।
এতো গেলো সরকারি পরিসংখ্যান কিন্তু বিদেশীদের পরিসংখ্যান দেখলে আপনি আকাশ থেকে পরে যাবেন। বিশেষ করে চীন কিম্বা বাংলাদেশী মালিকানাধীন হোটেল রেস্টুরেন্ট বা যে কোন প্রতিস্ঠানে কাজ করলে ও যেখান কার মানবেতর জীবন সকল কিছুকে হার মানায় । তাছাড়া শুধু বেতনই কম দেয় তা নয়। মালিক বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আহ! সে কি ব্যাবহার ?
সরকারি হিসেবে ঘন্টা অনুযায়ী বেতন তো দূরের কথা দিন চুক্তি কাজ করেও সপ্তাহ শেষে বা মাস শেষে বেতন না দিয়ে আইনের ভয় দেখানো হয়। অনেকে আইনের ভয়ে কোন রকম খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয় টুকু হারাতে চায় না। তাই সব জেনে শুনে মুখ বন্ধ করে দিনের পর দিন মাসের পর মাস এমন কি অনেকে বছরের পর বছর অতিবাহিত করছেন তাদের মানবেতর জীবন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন