জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
বাংলাদেশে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (দেড় হাজার কোটি ডলার) বিনিয়োগের অপেক্ষায় আছে সৌদি আরব। সৌদি প্রতিষ্ঠানগুলোই কেবল বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে এমন নয়, বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদেরও সৌদি আরবে বিনিয়োগে উত্সাহিত করা হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুলাইহান তার দপ্তরে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ওমরাহ পালনের সুযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এজেন্টের মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা আবেদন করা যাবে। এ বছর হজের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এখনও আসেনি। সৌদি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে পবিত্র দুই মসজিদের হেফাজতকারী সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন। সৌদি রাষ্ট্রদূতও মহান ও সৌভাগ্যবান এই উদযাপনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, এবছর একই সঙ্গে দু’টি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান উদযাপন করছে বাংলাদেশ, যা ইতিহাসে বিরল। এ উপলক্ষে অনেক শুভকামনা বাংলাদেশের জন্য। একই সঙ্গে আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা অর্জনে আপসহীন সংগ্রাম এবং ত্যাগের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমার সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানাই। দোয়া করছি, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
বাংলাদেশ-সৌদি আরব সম্পর্ক প্রসঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৪৫ বছরে এই সম্পর্ক কূটনৈতিক, রাজনৈতিকসহ সব পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে। দুই দেশ রোহিঙ্গাসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করছে। পারস্পরিক সহযোগিতাও আছে। ২২ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সৌদি আরবের ‘ভিশন-২০৩০’ বাস্তবায়নে তারা কাজ করছে।
১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনের সময় ও ১৯৭৪ সালে লাহোরে ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের সময় বঙ্গবন্ধু ও সৌদি বাদশাহ ফয়সালের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে সম্পর্ক ক্রমেই জোরালো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত বছরগুলোতে বেশ ক’বার সৌদি আরব সফর করেছেন। সৌদি আরবের মন্ত্রী, প্রতিনিধিরাও বাংলাদেশ সফর করেছেন। সৌদি ইমামরাও বাংলাদেশে খুতবা দেওয়ার জন্য আসেন।
বাংলাদেশে দেশটির বিশাল বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে। সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীদের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশ। এর কারণ বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা।
তিনি বলেন, জ্বালানি, তেল, তরলীকৃত গ্যাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, খাদ্যসহ অন্য খাতে সৌদি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী যোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতা অসাধারণ। ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আছে। এককথায় বিশ্বে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র।
সৌদি আরবের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সুযোগ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, নিয়োগকারী পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় একজন কর্মী তার সুবিধামতো নিয়োগকারী বদলাতে পারবেন। তিনি ‘রি-এন্ট্রির’ সুযোগ পাবেন। প্রয়োজনে চলেও আসতে পারবেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশি কর্মীদের সৌদি আরবে অন্য দেশগুলোর দক্ষ কর্মীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে।
এজন্য তিনি চান, দক্ষ কর্মীরা সৌদি আরব যাক। এদেশে দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে আরো বেশি দক্ষ কর্মী সৃষ্টির জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন