সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

সবার জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে অন্য দেশগুলোকে টিকা উৎপাদনে সহায়তা দিতে ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশগুলোকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) ‘এ ওয়াল্ড ইন চেঞ্জ: জয়েন হ্যান্ডস টু ট্রেংদেন গ্লোবাল গভর্নেন্স এন্ড অ্যাডভান্স বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) কোঅপারেশন’ শীর্ষক চার দিনের বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’র (বিএএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পূর্ব রেকর্ড করা ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

 

কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বলেছেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।

তিনি উল্লেখ করেন যে, করোনা মহামারি আমাদেরকে মানব ইতিহাসের এক চূড়ান্ত পথে নিয়ে এসেছে এবং সম্ভবত আমাদের সময়ের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

তিনি বলেন, ‘মহামারির আর্থ-সামাজিক প্রভাব ব্যাপক এবং এখনও পর্যন্ত তা বাড়ছে। সুতরাং সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অংশীদারিত্ব এবং সংযোগ

শেখ হাসিনা তিনটি বিষয়ে মনোনিবেশ করেন –

প্রথমত, মহামারির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য দৃঢ় অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তা এবং বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের পণ্য হিসেবে ঘোষণা করে ভ্যাকসিনগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করা।

দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য একসাথে কাজ করার প্রয়োজনয়ীতা এবং তৃতীয়, বিরামবিহীন শারীরিক এবং ডিজিটাল সংযোগ।

তিনি বলেন, ‘আসুন একসাথে চিন্তা করি, একসাথে কাজ করি এবং একসাথে এগিয়ে যাই।’

আরো তহবিল গঠন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি সংকট চলাকালীন কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাপী সম্প্রদায়েরর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, সব দেশকে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে কার্যকর করার জন্য একসাথে কাজ করা দরকার যাতে প্রত্যেকের ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ডব্লিউএইচও, জিএভিআই এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবশ্যই সদস্য রাষ্ট্রের অধিকার, সাম্য এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন পণ্য হিসেবে ঘোষণা করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশগুলোকে অন্যদের সার্বজনীন ভ্যাকসিনের কভারেজ অর্জনের লক্ষ্যে তাদের উত্পাদন করতে সহায়তা করা উচিত।

তিনি বলেন, এই সংকটময় সময়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তাও আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর তহবিল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ মহামারির বিরূপ প্রভাব হ্রাস করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমরা এখন পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি যা আমাদের জিডিপির ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।’

তিনি উল্লেখ করেন যে সার্ক, বিমসটেক, এসএএসইসি, বিবিআইএন এবং বিসিআেএম’র মাধ্যমে বাংলাদেশ বিভিন্ন আঞ্চলিক যোগাযোগের উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত।

‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং এর বাইরেও বহু মাল্টি মডেল লিংকেজের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং বাংলাদেশ বিশ্বাস করে বৈশ্বিক গভর্নেন্স শক্তিশালী করা এবং অ্যাডভান্স বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং এর বাইরেও বহু-মাল্টিমডেল লিংকেজের সাথে সম্পৃক্ত এবং বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে বিআরআই এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে এই মহাদেশে বিপুল জনসংখ্যা, বিস্তৃত বাজার এবং প্রযুক্তিগত সুবিধা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে আরও দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি। এটি আমাদের এসডিজি অর্জন করতেও সহায়তা করবে যা আমরা প্রত্যেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । একে অপরের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আমাদের সর্বোচ্চ প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা বাড়ানো দরকার।’

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন