জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (২ মে) ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়ার আদালতে এ মামলার আবেদন করেন মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান।
গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন মুনিয়ার বড় বোন বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় একজনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন। তবে পুরো ঘটনা না জেনে শুধু একজনকে আসামি করে মামলা করেছেন বলে আর্জিতে উল্লেখ করেছেন আশিকুর রহমান।
আশিকুর রহমানের মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, আমরা তিন ভাই-বোনের মধ্যে মোসারাত জাহান মুনিয়া তৃতীয়, বয়স ২১ বছর। সে মাধ্যমিক শেষে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদ্বশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ঘটনার সময় মুনিয়া দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত ছিল। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে পড়াশোনার জন্য যথাসাধ্য সহযোগিতা করে আসছিলাম। এর মধ্যে আসামি নাজমুল করীম চৌধুরী শারুনের সঙ্গে আমার বোনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে মাঝে মধ্যে আসামি শারুনের সঙ্গে কথাবার্তা ও দেখা সাক্ষাৎ হতো আমার বোন মােসারাত জাহান মুনিয়ার। আমার বোন হত্যার পূর্বের তার কাছ থেকেই আমি এসব কথা শুনেছি।
আর্জিতে আরও বলা হয়, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় গত দু বছর আগে পরিবারের কারো সঙ্গে কথা না বলে আমার আরেক বোন নুসরাত জাহান তানিয়া ও তার স্বামী মিজানুর রহমান গুলশানে ফ্লাট ভাড়া করে। সেখানে আমার ছোটবোনকে থাকাতে নির্দেশ দেয়। সেই মোতাবেক মুনিয়া সেখানে অবস্থান শুরু করে।
আর্জিতে বলা হয়, আমার বোনের সঙ্গে সায়েম সোবহান আনভীরের কেবলই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। সায়েম সোবহান আনভীর এবং নাজমুল করিম শারুনের মধ্যে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। আমার বোন মুনিয়াকে ব্যবহার করে শারুন আনভীরের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ীক অনেক গোপন তথ্য কৌশলে জেনে নেয়। আমার সরল ও কোমলমতি বোন বিষয়টি বুঝতে পারে শারুনের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে মুনিয়ার ওপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয় শারুন এবং প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। বিষয়টি আমার বোন আমাকেসহ পরিবারের সবাইকে জানায়। উপরোক্ত ঘটনার আলোকে আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে, মুনিয়াকে আনভীরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে না পেরে শারুনই আমার বোনকে তার সহযোগীদের নিয়ে হত্যা করে বলেও আর্জিতে উল্লেখ করেন মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান।
গত ২৬ এপ্রিল মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুনিয়া ও শারুনের কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন