জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
সিলেটে রমজান মাসেও থেমে নেই মাদক ব্যবসায়। হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল ও গাজাসহ নানা জাতের মাদক। সিলেটের সীমান্ত দিয়ে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঢুকছে এসব মাদক। সিলেট ছাড়াও হাত বদল হয়ে এসব মাদক চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। মাদক ইস্যূতে বসে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কড়া নজরদারির কারণে প্রতিদিনই মাদকসহ ধরা পড়ছে কারবারিরা। গত এক মাসে সিলেটে র্যাব ও পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে শতাধিক মাদক কারবারি। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদক। তবে গ্রেফতারকৃতদের বেশিরভাগই খুচরা কারবারি ও ক্যারিয়ার।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কড়া নজরদারির পরও সিলেটে লাগাম টানা যাচ্ছে না মাদক ব্যবসায়ের। বিশেষ করে সিলেট নগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা। চিহ্নিত স্পট ছাড়াও পাড়া-মহল্লায় এজেন্টদের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা। প্রতিদিনই ইয়াবাসহ হাতে নাতে ধরা পড়ছেন মাদক কারবারিরা। কিন্তু এরপরও থামানো যাচ্ছে না ইয়াবার বিস্তার। মাদক কারবারিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের পর কয়েক মাস জেল খেটে জামিনে বের হয়ে পুণরায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়াচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সিলেটের জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসছে ইয়াবা। এর মধ্যে জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়েই বেশি আসছে এই মরণনেশার ট্যাবলেট। জকিগঞ্জ থেকে শহরে আসার পথে মাঝে মধ্যে ইয়াবার বড় চালান আটক হলেও বেশিরভাগই রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। সূত্র জানায়, জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসা ইয়াবার চালান প্রথমে স্থানীয় মাদক কারবারিরা তাদের হেফাজতে মজুদ করে রাখে। পরে তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয় সিলেট নগরে। সেখানে এজেন্টদের মাধ্যমে সারা নগরীতে ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের দিয়ে বিক্রি করা হয়। কিছু চালান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়ও পাঠিয়ে থাকে মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া মাদক কারবারিদের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সূত্র আরও জানায়, অন্যান্য মাদকের মধ্যে ফেনসিডিল আসে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার সীমান্ত দিয়ে। আর ভারতীয় মদ বেশি আসে কোম্পানিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে।
সিলেটস্থ র্যাব-৯ এর মূখপাত্র এএসপি ওবাইন জানান, সিলেটের তিন দিকেই ভারত সীমান্ত। এসব সীমান্ত পথ দিয়েই সিলেটে প্রবেশ করছে মাদক। এর মধ্যে জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা বেশি আসে, বিভিন্ন সময় অভিযানে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে। মাদকের বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে ওবাইন বলেন, ‘কোথাও মাদক কেনাবেচা বা পাচারের খবর পেলে র্যাব সাথে সাথে অভিযান চালাচ্ছে। এতে মাদকসহ কারবারিরা আটকও হচ্ছে।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, মাদকের বিরুদ্ধে সুক্ষ্ম নজরদারি রয়েছে। ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগর পুলিশ কাজ করছে। মাদক কারবারিদের ধরতে সাদা পোষাকে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান জানান, সিলেটের সবকটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে মাদক আসে। এর মধ্যে জকিগঞ্জ সীমান্ত বেশি মাদকপ্রবণ। তবে পুলিশের তৎপরতার কারণে মাদক কারবারিরা নিয়মিত ধরা পড়ছে ও মাদক উদ্ধার হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন