ঈদের পূর্বেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করুন : কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন



আসন্ন ঈদুল ফিতরের পূর্বেই প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক নির্বিশেষে সকল শ্রমিকের বকেয়া মজুরি ও বোনাস (উৎসব ভাতা) প্রদান এবং বন্ধ পাটকল-চিনিকল শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধের দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন।

শনিবার (৮ মে) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও সমন্বয়ক কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া এ আহ্বান জানান।

তারা বলেন, করোনা মহামারীর এসময় শ্রমিকদের ঈদবোনাস ও বকেয়া বেতন পরিশোধ করুন, যাতে  করে শ্রমিকরা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে এক সাথে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারে। শ্রমিকদের জন্য ঈদ কখনও আনন্দের হয়ে আসে না, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত তাদের কাজ করতে হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিবছরই রমযান মাসে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা-বোনাস নিয়ে টালবাহানা করে মালিকপক্ষ। আর তার বলি হতে হয় খেটে খাওয়া লাখো শ্রমিককে। সময় মতো বেতন ও ন্যায্য মজুরি না পেয়ে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয় শ্রমিকরা। এ অবস্থার অবসান ঘটিয়ে দ্রæত তৈরি পোশাক খাতসহ সকল সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের বেতনভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করা উচিত।

তারা বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত ‘লকডাউনের’ সুযোগে মালিকদের দুরভিসন্ধি, অবহেলা ও মালিক তোষণ নীতির কারণে শ্রমিকরা মজুরি-বোনাস নিয়ে দুর্ভোগের পাশাপাশি ছাঁটাই এবং লে-অফের যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। তৈরী পোষাক কারখানার মালিকরা প্রণোদনা পাওয়ার পরও মজুরি পরিশোধে নানা রকম টালবাহানা করেছেন। গত বছর পোষাক কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের জন্য সরকারের কাছ থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনাসহ নানামুখী সুযোগ-সুবিধা আদায় করেও সকল শ্রমিকদের পূর্ণ মজুরি ও বোনাস পরিশোধ করেননি। পোষাক শিল্প রক্ষার নামে মূলত লগ্নিপুঁজির স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি আনুকূল্যে পোষাক শিল্প গত বছরও বন্ধ ছিল না, আর এ বছর গার্মেন্টস লকডাউনের আওতামুক্ত।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চ, দূরপাল্লার বাস, হোটেল-রেস্তোরাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লকডাউনের কারণে বন্ধ এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের রিকশা-ঠেলা-দিনমজুর, স-মিল, চাতাল, মুদ্রণ, দোকান কর্মচারী, নির্মাণ, বারকি, দর্জি, স্বর্ণশিল্পি, ক্ষৌরকার, পাদুকা শ্রমিকসহ নিম্নআয়ের কর্মজীবী অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্তু শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের এই দুঃসহ সময়ে না কোন মালিক তাদের সহায়তা করছেন; না তারা পাচ্ছেন সরকারি সহায়তা। এমন কি বন্ধ পাটকল-চিনিকলের শ্রমিকদের বকেয়া পাওনাও পরিশোধ করা হয়নি। শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান না করে লকডাউন চাপিয়ে দেওয়া সরকারের দায়িত্বহীনতার পরিচয় বহন করে।

তারা মালিকদের অবহেলার কারণে ঈদ যেন শ্রমিকদের জন্য আশংকা ও উত্তেজনার বিষয় না হয় সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বজাগ দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মজুরি-বোনাস নিয়ে যেকোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে তার দায় মালিকদেরকে বহন করতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন