বৈশ্বিক মহামারী করোনা দ্বিতীয় ঢেউ চলমান আবার এর মধ্যে তৃতীয় ঢেউ এর আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে অধিকাংশ মানুষ আয়-রোজগার, কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। সাধারণ ও নিন্ম আয়ের অনেক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে জীবন ও জীবিকা সুরক্ষায়। অধিকাংশ নগরবাসী নিয়মিত সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, বিআরটিএ এর নিয়মিত বিল পরিশোধে হিমসীম খেতে হচ্ছে। এসমস্ত বিলের বোঝা আবার অনেক জায়গায় ভাড়াটিয়া ও ভোক্তার উপর বর্তাচ্ছে। উন্নত দেশগুলিতে করোনার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সরকারী উদ্যোগে সর্বস্তরের জনগন ও পেশাজীবিদের জন্য নানা প্রণোদনা ও সহায়তা থাকলেও বাংলাদেশে তা অনুপস্থিত। তাই সাধারন মানুষের জীবন-জীবিকা সুরক্ষায় সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, বিআরটিএ এর সকল বকেয়া বিলের সার চার্জ মওকুপের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ। মুজিববর্ষের প্রাক্কালে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনসহ অনেকেই বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স ও বিলের সার চার্জ মওকুপের ঘোষনা দিলেও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে কোন ঘোষনা দেয়নি। সরকার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋনের সুদ স্থগিত করার নিদের্শনা দিলেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি সুদে আসলে সব সুদ আদায় করে নিয়েছে। ফলে অনেক নাগরিকের ইউটিলিটি খাতে বিপুল পরিমান বকেয়া অনাদায়ী থেকে গেছে। আবার আর্থিক সংকটে পতিত গ্রাহকরা বকেয়া বিলের সুদসহ বোঝা টানতে হচ্ছে। এ অবস্থায় করোনার ক্ষয় ক্ষতি লাগবে অবিলম্বে বকেয়া বিল ও হোল্ডিং ট্যাক্সের উপর সকল সার চার্জ মওকুপের নির্দেশনা প্রদানের জন্য সরকার ও সংস্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
রবিবার সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবি জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন বাংলাদেশ ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋনের কিস্তি আদায় না করা, বিলম্ব সুদ না নেবার নির্দেশনা দিলেও তাদের সে নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি পরবর্তীতে সুদসহ আদায় করে নেন। ফলে মানুষ একদিকে তাদের আয় রোজগার কমে গেছে। অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, করোনার ওষুধ ও চিকিৎসা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়সহ নানা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুন। যা তাদের জন্য “মরার ওপর খারার ঘা” হিসাবে আর্বিভুত হয়েছে। সরকারের সংস্লিষ্ঠ মহল একটি নির্দেশনা দিয়েই ক্ষান্ত। নির্দেশনার মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে কোন রকম তদারকি না থাকায়, যে যেভাবে পারে, সেভাবেই জনগনের পকেট কাটছে। যা শুধু দুঃখজনক নয়, করোনা কালে অমানবিক ও অনাকাংখিতও বটে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন