খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেয়নি সরকার

 জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘উন্নত চিকিৎসার’ জন্য বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়নি সরকার। তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন নাকচ হয়েছে। আইন অনুযায়ী দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এ জন্য খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদন আমরা মঞ্জুর করতে পারিনি।’

রোববার (৯ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক কারণে ৪০১ ধারায় দণ্ড স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে তার সুবিধামতো চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বাসায় থেকে কিংবা সুবিধামতো চিকিৎসা নিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে করোনা আক্রান্ত হলে তিনি এভার কেয়ার হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার আরেকটি আবেদন করেন বিদেশে নেওয়ার জন্য। সেটার আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখার জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। তারা মতামত দিয়েছেন, যে ধারায় তার দণ্ড স্থগিত রেখে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেটা পুনরায় বিবেচনা করে বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই আমরা তাদের আবেদনটি মঞ্জুর করতে পারছি না।’

একটি সূত্র জানিয়েছে, আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামতে বলেছে, সাজাপ্রাপ্ত কাউকে এ ধরনের সুযোগ দেওয়া যায় না। ফলে সাজাপ্রাপ্ত কেউ বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন না।

সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অভিমত দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, কী মত দিয়েছেন সেটা জানাতে চাননি। তখন তিনি জানান, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলবেন।

এর আগে আইন সচিব গোলাম সরোয়ার জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার নথি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নথিটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়েও পাঠানো হতে পারে বলে জানান আইন সচিব।

২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর তিন মাসের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। এরপর খালেদা জিয়া আর কোনো দেশে যাননি।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনায় আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হয়। কিন্তু আবারও ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে গত সোমবার খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এখনো তিনি সেখানেই আছেন। এর মধ্যেই পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। এটি আইন মন্ত্রণালয় হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়।

এর আগে রোববার দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) করোনা নেগেটিভ এসেছে। তার যে শারীরিক সমস্যাগুলো ছিল সেগুলো ক্রমান্বয়ে উন্নতি হচ্ছে। আজও একটু আগে চিকিৎসকদের সঙ্গে আমার কথা হয়। তারা জানিয়েছেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।’

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা এমন একটি রোগ, যেটি একজন বয়স্ক মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্‌বেগের কারণ। যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, উচ্চরক্তচাপ আছে তাদের জন্য উদ্‌বেগের কারণ হয়ে ওঠে। খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আজ এতদিন পরও আতঙ্কের বাইরে নয়। সেজন্য চিকিৎসকেরা উদ্‌বেগের সঙ্গে তার চিকিৎসা করছেন।’

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন