জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
ঈদ উপলক্ষে মানুষ যেভাবে ঢাকা ছাড়ছে তাতে ঈদের পর দেশে ভারত ও নেপালের মতো সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই সময় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচল করাকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের সঙ্গে তুলনা করে এই কথা বলেছেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ লকডাউনের সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে যেভাবে ফেরি পারাপারসহ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছে তা একেবারে সুইসাইড সিদ্ধান্তের শামিল।’
সোমবার (১০ মে) দেশের চারটি সীমান্ত এলাকার বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় করণীয়’ নিয়ে জরুরি ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে। ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন নেপালে ছড়িয়ে গিয়ে সেখানে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এখন আমাদের দেশেও চলে এসেছে। এইরকম জটিল পরিস্থিতিতে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে মানুষ যদি গ্রামে চলে যায়, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবারসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘শহরাঞ্চলেও মানুষ এখন বেপরোয়া চলাফেরা করছে। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বিভাগীয় শহরে শপিংমলসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ চলাফেরা করছে। এভাবে চলতে দিলে ঈদের পর দেশে ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।’
করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার রুখতে ঈদযাত্রা ঠেকাতে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে জরুরি পরিষেবার জন্য চালু থাকা ফেরিতে সোমবার উঠে পড়েন দক্ষিণাঞ্চলমুখী বেপরোয়া মানুষেরা। ছবি: পূর্বপশ্চিম
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি সীমান্ত এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। ভারতে যাতায়াতকারী ব্যক্তির পরিবারসহ সবাইকে দ্রুত ও বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। সীমান্ত এলাকার কোনো যানবাহন নিজ জেলার বাইরে যেন চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সীমান্ত এলাকার চারটি বিভাগ রংপুর, সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, সীমান্ত এলাকা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে নির্দেশনা দেন ও তাদের মতামত শোনেন।
তিনি সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক হারে কোভিড পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেন। ভারতে যাতায়াতকারীদের পরিবারের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে বলেন এবং সীমান্ত এলাকায় যেকোনো ধরনের যানবাহন যেন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচল করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, এডিজি (পরিকল্পনা) মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা, খুলনা, চট্রগ্রাম, রংপুর ও সিলেট বিভাগের রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীও কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন্সসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তারা আলোচনায় আরো অংশ নেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন