আবুল কাশেম রুমন,সিলেট ||
২০১৭ সালে সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহে ৪ শতক জমি কিনেছিলেন। নিয়ম মেনে জমির কাগজপত্র ও দখল বুঝে পেয়ে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই বাসা থেকে উচ্ছেদ করতে মিথ্যা মামলা ও সন্ত্রাসী হামলাসহ নানা অপকর্ম শুরু করেন বাসাটির আগের মালিক। এমনই অভিযোগ করেছেন শাহী ঈদগাহ ধানসিঁড়ি এলাকার ৪৩/এ, -এর স্থায়ী বাসিন্দা সৌদী প্রবাসী নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী জোৎস্না আক্তার। শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ও আমার স্বামী ২০১৭ সালে শাহী ঈদগাহের বাসিন্দা সাহারা আহমদের কাছ থেকে সাফকবালা দলিল মূলে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে ৪ শতক ভূমি ক্রয় করি। তখনই সাহারা আহমদ এলাকার গণ্যমান্য মুরব্বিদের উপস্থিতিতেই আমাদেরকে দখল বুঝিয়ে দেন। এরপর থেকেই আমরা এ বাসায় বসবাস করছি। সিলেট সিটি কর্পোরেশনে হোল্ডিং, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সবকিছুই বর্তমানে আমাদের নামেই রয়েছে। এরপর আমার স্বামী সৌদি আরব চলে যান এবং এখনো তিনি প্রবাসে রয়েছেন। আমার স্বামীর অনুপস্থিতিতে দেখাশোনা করেন আমার বড় ভাই গুলজার হোসেন ও আমার প্রতিবন্ধী বোন ফাহিমা আক্তার।
তিনি বলেন, আমার স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পরপরই একটি মহল আমাদের বাসা জবর দখলে মরিয়া হয়ে উঠে। এনিয়ে ২০১৯ সালে স্থানীয় শাহী ঈদগাহ, হাজারীবাগ, কাজিটুলা মহল্লার সালিশ বিচার হয় এবং একটি রোয়েদাদনামার আলোকে সায়রা খানম ওরফে সাহারা আহমদ ও আমার স্বামী নাজিম উদ্দিন এর মধ্যে রোয়েদাদনামার আলোকে সালিশানগণ যে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন তাতে শর্তাবলী মেনে স্বাক্ষর প্রদান করেন। উক্ত রোয়েদাদনামায় স্থানীয় শাহী ঈদগাহ মসজিদের সভায় সাহারা আহমদের ছেলে তারেক আহমদ ও তানভীর আহমদ ও স্বামী লায়েক আহমদ ভবিষ্যতে উক্ত ভূমি নিয়ে কোন ধরনের বিরোধ করবে না বলে স্বাক্ষর প্রদান করেন। কিন্তু এরপরও সেবুল মিয়া ও তারেক আহমদ বাসার বিক্রেতা সাহারা আহমদকে দিয়ে আমার ভাই গুলজার আহমদ ওরফে গুলজার হোসেন, স্বামী নাজিম উদ্দিন ও আমার বিরুদ্ধে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রতারণা ও দলিল জালিয়াতির অভিযোগে একটি মামলা করায়। ওই মামলার বাদী সাহারার মামলা মিথ্যা বলে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুধু এই মামলা নয়, প্রতিপক্ষ সাহারা আহমদের স্বামী-ছেলে ও তাদের ভাড়াটিয়া ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা করে আমাকে ও আমার স্বজনদের গুরুতর আহত করে। আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেই। এ ঘটনায় আমার ভাই গুলজার হোসেন বাদী হয়ে সাহারা, সাহারার ছেলে তারেক, তানভীর, মেয়ে তারিন ও শাহারার পক্ষে ভাড়াটে একাধিক মামলার আসামী পূর্ব চৌকিদেখীর সেবুলকে এজাহারভুক্ত করে একটি মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। তারেক আহমদ মিরাবাজারের ডাকাতি মামলায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল।
তিনি বলেন, কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় সাহারা, সাহারার ছেলে তারেক ও তার ভাড়াটিয়া সেবুল বাহিনী আমাদেরকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে হামলা-মামলা অব্যাহত রেখেছে। আমার দায়েরী মামলার আসামি পূর্ব চৌকিদেখীর সেবুলকে দিয়ে আমাদেরকে চরমভাবে বিষিয়ে তুলেছে। সেবুল এয়ারপোর্ট থানায় আমার ভাই গুলজার হোসেনকে আসামি করে মিথ্যা বানোয়াট ও সাজানো একটি মামলা করে। অজ্ঞাত কারণে পুলিশ ঘটনার প্রাথমিক তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে মামলাটি গ্রহণ করায় আমরা প্রবাসী পরিবার চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছি। এ ছাড়া প্রতিপক্ষ সাহারা আহমদ আমার ও আমার ভাইবোনের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন ও অপবাদমূলক তথ্য প্রচার করেছে। এসব তথ্যের কোন ভিত্তি না থাকায় অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, সায়েরা খানম ওরফে সাহারা আহমদের পুত্র তারেক ও ভাড়াটে সেবুল বাহিনীর কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। তারেক ও সেবুল বাহিনী যে কোন সময় আমাদের কোটি টাকা মূল্যের বাসা-বাড়ি জবর দখল করতে পারে। তাই আমরা প্রবাসী পরিবারের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন