আবুল কাশেম রুমন,সিলেট||
দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি বাড়ির ১০টি রুম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ঘরে রক্ষিত নগদ আড়াই লক্ষ টাকা সহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জানা যায়, ৩০ মে রোববার বেলা ১ টা ১৫ মিনিটে কুচাই ইউনিয়নের আলমপুর গঙ্গারামের চক গ্রামের মৃত ছোয়াব আলীর ছেলে দুদু মিয়া, ছানা মিয়া ও নেছার আলীর বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তের মধ্যেই তাদের বাড়ির ১০টি রুম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আগুন লাগার খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যথাসময়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে না পৌছলে পাশের বাড়িতেও আগুন লাগার সম্ভবানা ছিলো।
নেছার আলী জানান, নগরীর উপশহরস্থ মেসার্স সোহেল তালুকদার এন্টারপ্রাইজ থেকে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ও রেগুলেটর ক্রয়ের অর্ডার দেই। অর্ডার অনুযায়ী দোকানের মালিক এক কর্মচারী দিয়ে সিন্ডিটার ও রেগুলেটার আমার বাড়িতে পাঠান। উক্ত কর্মচারী সিলিন্ডারটি পাকের ঘরে নিয়ে ফিটিং করার চেষ্টা করেন। এসময় দেখা যায় রেগুলেটারটি ২০ নম্বরের। অথচ নিয়ে আসা সিলিন্ডারটিতে ২২নং রেগুলেটর দরকার। আমার স্ত্রী ২০ নম্বর রেগুলেটর লাগাতে নিষেধ করে। কিন্তু কর্মচারী উল্টা ধমক দিয়ে শক্তি প্রয়োগ করে রেগুলেটরটি সিলিন্ডারে লাগায়। এ সময় নেছার আলীর স্ত্রীকে চুলায় আগুন জ্বালাতে বলে। কিন্তু মহিলা চুলায় আগুন জ্বালাতে অপারগতা প্রকাশ করলে কর্মচারী নিজেই গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বালানোর সাথে সাথে পুরো পাকরুমে আগুন লাগে। এ সময় কর্মচারী দৌড়ে ওঠান থেকে বালতি দিয়ে দু’বালতি বালু এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যায়।
অগ্নিকাÐের ঘটনায় দুদু মিয়াগংদের ঘরে থাকা নগদ আড়াই লক্ষ টাকা, ৫০ মন ধান, মহিলাদের স্বর্ণালংকার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পবিত্র কুরআন মাজীদ সহ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার সম্পদ পুড়ে ছাই হয়েছে। বর্তমানে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া সবাই পুড়ে গেছে।
আলাপকালে দুদু মিয়া বলেন, মেসার্স সোহেল তালুকদার এন্টারপ্রাইজ অদক্ষতার কারণে সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে আজ আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। এ ধরনের অদক্ষ কর্মচারীকে আইনে আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনার আর ঘটবে না। তিনি মেসার্স সোহেল তালুকদার এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান।
ঘটনার খবর পেয়ে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হক, আলমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম, সিলেট জেলা কৃষকলীগ নেতা শামীম কবির সহ এলাকার মুরব্বী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থরে গিয়ে তাদেরকে সমবেদনা জানান।
আলাপকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হক বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক নগদ ৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। আগামীকাল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।
আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ সুরমা (আলমপুর) ফায়ার স্টেশনের অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন মনির জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করি। আগুনে প্রায় ১২-১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন