মুসলিমদের মুছে ফেলতে চাইছে চীন: অ্যামনেস্টি

 জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

চীনের উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে নতুন ১৬০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ‘আমরা যেন যুদ্ধে শত্রুপক্ষ’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রিপোর্টটি প্রকাশ করে সংস্থাটি।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত গবেষণা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এই সময়ের মধ্যে তারা ১২৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

 

এর মধ্যে ৫৫ জন চীনের উইঘুর শিবিরে ছিলেন। আর ৬৮ জন সেই সব পরিবারের সদস্য, যে পরিবার থেকে কেউ হারিয়ে গেছেন বা তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

রিপোর্ট বলছে, জিনজিয়াংয়ে ১০ লাখের বেশি মানুষকে বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়েছে। মুসলিমদের ভয় দেখানোর জন্য চীন তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সাইটগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। প্রচুর সাক্ষী অ্যামনেস্টিকে বলেছেন, চীন মুসলিমদের মুছে ফেলতে চায়।

অনেকে বলেছেন, মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এমনকি মসজিদে ও মুসলিমদের বাড়িতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ছবি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাদের অনেকেই বলেছেন, তারা চীনে নিজেদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে ভয় পাচ্ছেন। তারা জানেন যে, রাষ্ট্র তাদের ওপর নজর রাখছে।

উইঘুর শিবিরের কথা

রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোনো রকম সতর্কতা ছাড়াই মাঝরাতে বাড়ি থেকে তুলে উইঘুরদের শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের তথাকথিত শিক্ষা-শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জোর করে নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করানো হয়। তারপর তাদের মধ্যে কিছু মানুষকে শিবিরে রাখা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়- তারা সন্ত্রাসবাদী এবং বিশ্বাসযোগ্য নয়।

যাদের শিবিরে আটকে রাখা হয়েছিল, তাদের কয়েকজন অ্যামনেস্টিকে বলেছেন, শিবিরের অবস্থা চীনের কারাগারের থেকেও খারাপ। তাদের সংশোধন-ক্লাসে যেতে হয়। তার আগে সারাদিন তাদের বসিয়ে রাখা হয়। শিবিরের ক্লাসে তাদের ইসলামের ‘খারাপ’ দিকগুলো বাধ্যতামূলকভাবে শিখতে হয়।

অ্যামনেস্টির সুপারিশ

এই মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, অপরাধের অকাট্য প্রমাণ না থাকলে শিবির থেকে সব উইঘুর মুসলিমকে মুক্তি দিতে হবে চীনকে। একইসঙ্গে এই শিবির বন্ধ করতে হবে। উইঘুরদের বিরুদ্ধে যাবতীয় অত্যাচার ও তাদের হেনস্থা করা বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও অপরাধের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক দল পাঠাবে।

অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ‘চীন মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ করেছে, তা তথ্য-সহ এই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। অন্য দেশগুলোকে সাহসী ভূমিকা নিতে হবে এবং চীনকে এই কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করতে হবে।’

অ্যাগনেস আরো বলেছেন, ‘আমাদের দেওয়া তথ্যপ্রমাণগুলো জানার পরও দেশগুলোর পক্ষে চুপ করে বসে থাকা মুশকিল।’

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই উইঘুরদের প্রতি চীনের নীতিকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে। চীন অবশ্য উইঘুরদের বিরুদ্ধে কোনোরকম অত্যাচারের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আছে। দেশটির দাবি, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের দেশগুলো হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন