জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে গেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অসুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। এনআইডি সেবা সরকারের হাতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে এমন নয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, এটি টেবিল-চেয়ার নয় যে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম, এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।
বুধবার (২৩ জুন) রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইন্সস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে মেডিক্যাল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এনআইডি সেবা হস্তান্তরের প্রজ্ঞাপন হয়ে গেলেও আলোচনার সুযোগ থাকছে কি না এই বিষয়ে তিনি বলেন, থাকছে, অনেক বড় প্রতিষ্ঠান তো এটা। কীভাবে নেবে না নেবে এই বিষয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে। এটা তো টেবিল-চেয়ার না যে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম।
এনআইডি সেবা চলে গেলে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমাদের অসুবিধা হবে। নিশ্চয়ই সচিব পর্যায়ে এই বিষয়ে কথাবার্তা হবে। আমাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তাদেরকে জানাবো।
কমিশনের চিঠির জবাবে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে কী এসেছে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, তারা শুধু বলেছেন যে আগের সিদ্ধান্তেই আছেন। এটার ওপরে অনেক কাজ। আমাদের সঙ্গে উনারা বসবেন, তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা তো আমাদের অবস্থান অনেক আগেই বলেছি।
তিনি বলেন, সরকারের কাছে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়েছে এরকম বলা যায় না। তারা নিতে চায়- আমরা দেবো না, এরকমও বলা যায় না। আমাদের বসতে হবে তাদের সঙ্গে, এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কথা। সেখানে আমাদের আরও যে যুক্তি আছে সেগুলো তুলে ধরবো। আমাদের যে অবস্থান আছে সেটা তাদেরকে বুঝাবো। এরপর সরকার কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে না নেবে, তা পরের কথা। এখন তো আগেই বলা যাবে না।
আলোচনার প্রস্তাব সরকারের তরফ থেকে আসবে বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কমিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেবিনেট তো আমাদের কাছে উচ্চ পর্যায়। কেবিনেট থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। তাদেরকে আমরা উত্তর দিয়েছি। আমরা এই পর্যায়ে আছি।
কমিশন চায় এনআইডি তাদের কাছে থাকুক বলে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন। সিইসি বলেন, সরকার কী যুক্তিতে চায়, তাদের অবশ্যই কিছু যুক্তি আছে। আমাদেরও কিছু যুক্তি আছে এগুলো নিয়ে আলোচনা (ডায়ালগ) হবে। তাদের বক্তব্য হলো, এই সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে না এবং সেই যুক্তিটা ঠিক। আসলে অন্য কোনও দেশে এটা থাকার বিষয় না। আর আমাদের যুক্তি হলো এই কাজটা আমাদের অনেক পরিশ্রমের ফসল। এই কাজটা করার জন্য আমাদের কয়েক হাজার নিবেদিত কর্মী তৈরি হয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রফেশনাল। এতো দিনের ভুল ভ্রান্তি শেষে সব পেরিয়ে অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তিসম্পন্ন কাজ তারা তৈরি করতে পেরেছে। এটার জন্য নির্বাচন কমিশন গর্ববোধ করে। এই প্রেক্ষিতে আমরা বলেছিলাম যে, এতোগুলো লোক আবার তৈরি করা, আবার ১২ বছর ঘুরে অন্য কোনও ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সম্ভব না। তাদের যুক্তি হলো সরকারের জিনিস তারা নিয়ে যাবে। আমরা বলি, আমরা সরকার না কিন্তু সরকারের যখন যা দরকার হয়, আমরা সরকারের সেসব সেবা দিতে পারি।
ইসিতে রাখার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এখনই বলা যাবে না। আমাদের যু্ক্তি হলো, এই রকম অভিজ্ঞ লোকেরা এগুলো তৈরি করেছে। তাদেরকে আবার নতুন করে তৈরি করতে হবে। আমাদের যে লোকগুলো আছে তাদের মাধ্যমে সেবা যদি দিতে পারি তাহলে ভালো হবে। এটা আমাদের যু্ক্তি।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন