সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সহস্র মোমবাতি প্রজ্বালন করে তার স্মরণে কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
আজ (২৬ জুন শনিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ জননীর স্মরণে সহস্র মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে সংগঠনের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ভাস্কর শিল্পী রাশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মিলন ঢালীসহ শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ভাস্কর রাশা বলেন, "শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধীদের আতঙ্ক। ৭৫ পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে তার অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শহীদ জননীর নেতৃত্বে আমরা রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। তার স্বামী এবং সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তিনি উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। শহীদ জননীর স্বপ্ন ও আদর্শ এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী হেফাজত-জামায়াত অপশক্তিকে নির্মূল না করা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।"
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, "শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আমাদের অনুপ্রেরণা। আজ তাঁর ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর আন্দোলন ও সংগ্রামের কারণে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি।"
সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন বলেন, "শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এর মৃত্যুবার্ষিকী প্রতিবছর জাতীয় ভাবে পালনের দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। রাষ্ট্র শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে উপযুক্ত সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে।"
তিনি বলেন, "১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিরুদ্ধে শহীদ জননী গণ আদালত গঠন করে প্রতীকী বিচার শুরু করেছিলেন। তাঁর আন্দোলনের কারণেই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারে শহীদ জননীর অসামান্য অবদান চীর স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, "যতোদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততোদিন শহীদ জননী প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায় বেঁচে থাকবেন। শহীদ জননীর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা পাকিস্তানি অপশক্তি স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম চলমান রাখবে। বাংলাদেশে কোন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে রাজনীতি করতে দিবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। শহীদ জননী আমাদের আদর্শ ও অনুপ্রেরণার প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। রাষ্ট্র শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে উপযুক্ত সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে।"
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন