জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর প্রায় দেড় হাজার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এছাড়া র্যাবের ভূমিকার কারণে উগ্রবাদে জড়িত ১৬ জন তরুণ-তরুণী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।
হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর পূর্তি সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৯ জুন) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। র্যাব সদর দপ্তরে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজানে নৃশংস জঙ্গি হামলা হয়। সেই হামলার ভয়াবহতায় স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো দেশ। জঙ্গিরা হত্যা করেছিল ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে। যাদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয় ও তিনজন বাংলাদেশি। এ ছাড়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার পর দেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় মামলা হয়। ওই মামলায় সংশ্লিষ্টদের সাজাও হয়েছে। তবে তা এখনো কার্যকর হয়নি। ওই ঘটনায় জঙ্গি দমনে মূল ভূমিকা পালন করে র্যাব। দেশে উগ্রবাদ দমনে র্যাব অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ দমনে বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, জঙ্গিরা যে পথে হাঁটছে, র্যাব তাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। দেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জঙ্গি মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের সবাই মিলে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক আরও জানান, মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ৪৬ হাজার কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। দেশে কিশোর গ্যাংয়ের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কিশোরেরা যাতে জঙ্গি এবং মাদকে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান তিনি। ভেজাল পণ্যবিরোধী অভিযান এবং রোগ নির্ণয়ের নকল কিট জব্দ এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও র্যাবের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন র্যাবের মহাপরিচালক।
দেশে জঙ্গিদের হামলার আর কোনো আশঙ্কা আছে কি-না-এ প্রশ্নে র্যাব প্রধান বলেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, বড় ধরনের হামলার কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই। জঙ্গিদের চেয়ে র্যাব এগিয়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে দেশের জঙ্গিদের কোনো যোগাযোগ রয়েছে কি–না? এ প্রশ্নের জবাবে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে দেশের জঙ্গিদের কোনো যোগ সূত্র নেই।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে র্যাব প্রধান বলেন, মামলাটি অনেক সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। র্যাব অনেক মামলাই দ্রুত তদন্ত করে বের করতে পেরেছে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে সময় লাগতে পারে।
কিশোর গ্যাং নিয়েও কথা বলেন র্যাব মহাপরিচালক। তিনি বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যাতে জঙ্গিবাদে জড়াতে না পারে, সে জন্য র্যাব কাজ করছে। সন্তান কী করছে, সে বিষয়ে বাবা-মাকে খোঁজ-খবর রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ইমতিয়াজ আহমেদ। এ ছাড়া র্যাবের আরো কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন