দেশকে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন এম সাইফুর রহমান: মির্জা ফখরুল

gbn

জিবি নিউজ ডেস্ক ।।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান বাংলাদেশের উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ছিলেন একজন সংস্কারক। তিনি বাংলাদেশকে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

শনিবার বিকালে বিএনপি’র সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. সাইফুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলেন বক্তারা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি সাইফুর রহমান সাহেবের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য পুরোপুরিভাবে যোগ্য নই আমি। এ কারণে যোগ্য নই যে, তিনি উঁচুমানের একজন সফল পেশাজীবী এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। তার সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি ছিলেন একজন মেধাবী দেশপ্রেমিক এবং একজন সংস্কারক। বাংলাদেশের অর্থনীতি যখন তথাকথিত সমাজপতিদের হাতে একেবারে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, তিনি সেটাকে পরিবর্তন করে একটা মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন। যদিও এই কাজগুলো সে সময়ে ছিল অত্যন্ত কঠিন। ওই সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন বাংলাদেশকে পরিবর্তন করার হাত দিয়েছিলেন। এই দেশটাকে একটা সুখী এবং সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখনই সাইফুর রহমানকে মন্ত্রিসভার উপদেষ্টা বনিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আর এম. সাইফুর রহমান অত্যন্ত দক্ষতা এবং আস্থার সঙ্গে ওনার দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি বলেন, সাইফুর রহমান ১২ বার বাজেট পেশ করেছেন। তিনি দেশের অর্থনীতিকে একটা শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছেন তার সহকর্মীদের নিয়ে। তিনি ছিলেন একজন বিপ্লবী সংস্কারক। তিনি অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যেটা অনেক সময় জনপ্রিয় ছিল না। ওই সময় বিরোধীদল ছাড়াও দেশের বিশেষজ্ঞরা ওনার সমালোচনা করেছেন। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ দৃষ্টি, মেধা, প্রজ্ঞা প্রমাণ করেছে তিনি দেশের অর্থনীতি ডেস্ট্রয় (ধ্বংস) করেননি, বরং বিনির্মাণ করেছেন। তিনি নতুন বাংলাদেশের এবং বাংলাদেশকে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

ফখরুল আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং সাইফুর রহমান অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিলেন। আজকে সেই অর্থনীতিকে একেবারে টেনে নিচে নামিয়ে নিয়েছে এই অনির্বাচিত সরকার। আজকে ক্ষমতায় যারা আছেন তাদের একটাই লক্ষ্য টাকা বানাও। দুর্নীতি করো। মেগা প্রজেক্ট করো। সেই মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে মেগা লুট করো। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮শ’ মিলিয়ন চলে গেল। কার কী হয়েছে। এই কারণে কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? কারো শাস্তি হয়েছে? হয়নি। শেয়ার বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্যাংকগুলো একটার পর একটা লোপাট হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশে অহরহ ঘটছে। এই ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে রসাতলে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সাইফুর রহমানের কৃতিত্ব ছিল সেখানেই। দেশের একটা ভঙ্গুর অর্থনীতিকে পরিপূর্ণতা দিয়েছেন সাইফুর রহমান। পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই। সাইফুর রহমানের মতো মানুষ, তার মতো দেশপ্রেমিক বাংলাদেশে আসবে কি না, আমরা পাবো কি না, সেটা আমার ব্যক্তিগতভাবে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সাইফুর রহমান একজন সৎ, স্পষ্টবাদী এবং সর্বজন প্রিয় রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতির সংস্কারক ছিলেন। তিনি ৫২’র ভাষা আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন। আমি মন্ত্রী থাকাকালে ওনার সঙ্গে অনেকবার মতবিনিময় এবং অনেক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করেছি। তিনি সে সময় অর্থনীতির যে ভিত্তিগুলো তৈরি করেছেন আজকে সেই ভিত্তিগুলোর উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তিনি অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করার জন্য সব সময় গুরুত্ব দিতেন জাতীয় স্বার্থ। জাতীয় স্বার্থকে সব সময় প্রাধান্য দিয়ে বৈদেশিক ঋণ, সহযোগিতা এবং দেশের অর্থনীতিকে বিনির্মাণে যেগুলো সহযোগী হবে সেগুলো নেয়ার জন্য তিনি উৎসাহ দিতেন।

তিনি বলেন, সিলেটের উন্নয়নে এম. সাইফুর রহমানের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে সিলেট বিভাগ করার জন্য কীভাবে কনভিন্স করেছেন সেটা আমরা দেখেছি। তিনি সিলেটের এক প্রোগ্রামে ম্যাডামকে বলেছেন, যদি আপনি সিলেটকে বিভাগ ঘোষণা না দেন তাহলে আমার রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করা ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। এই ছিলেন সাইফুর রহমান।

যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সঞ্চালনায় ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুর রহমানের ছেলে, সাবেক সংসদ সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম. নাসের রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ডা.শাখাওয়াত হাসান জীবন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারন সম্পাদক সাবেক মেয়র জিকে গউছ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক প্রমূখ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন