নবীগঞ্জের মায়ের সাথে ঢাকা থেকে ঈদ করতে এসে চেয়ারম্যান সহ ৩জন মিলে পালাক্রমে ধর্ষন! আদালতে মামালা

বুলবুল আহমদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ থেকে ॥

পবিত্র ঈদ- উল আযহার ছুটি পেয়ে মায়ের সাথে ঈদ করতে এসে নবীগঞ্জে জোর পূর্বক ধর্ষনের শিকার এক যুবতী। বাসাতে মা না থাকায় কৌশলে বাসায় ডুকে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে লম্পটরা পালাক্রমে ধর্ষন করে চম্পট দেয়। এ ঘটনায় গত ১ সপ্তাহ ধরে উপজেলা জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। ধর্ষীতার পরিবার হুমকির মূখে। যেকোন সময় ধর্তাষীতার উপর অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটতে পারে বলে তারা আশংখা করছে। মামলা ও ধর্ষীতার পরিবারের সূত্রে জানাযায়, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৩নং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামের পেয়ারা বেগমের সাথে বিয়ে হয় একই এলাকার জয়নাল মিয়ার।

বিয়ের পর তাদের দাম্পত্ত জীবন মোটামোটি সূখেই কাটছিল। এর মধ্যে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তার নাম রাখা হয় শাপলা আক্তার। এরপর থেকে তাদের সংসারে নেমে আসে মনোমানিন্য। স্বামীর সাথে অভিমান করে চলে আসেন ইনাতগঞ্জ বাজারে একটি ভাড়াটিয়া বাসায়। এখানে এসে পেয়ারা বেগম ভাঙ্গারী ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে তার মেয়েকে নিয়ে জীবিকা রক্ষা করেন। এর মধ্যে মেয়েও বড় হয়ে যায়। সংসারের অভাব অনুটন দেখে জীবিকার তাগিদে মেয়ে শাপলা আক্তার ঢাকায় চাকুরী করতে শুরু করেন। মেয়ে চাকুরীতে যাওয়ার সুবাদে মায়ের আর কোন কাজ কাম করতে হয়নি। তার মেয়েই চাকুরী করে সংসারের হাল ধরে।

এবারের ঈদে ছুটি শেষে মায়ের সাথে ঈদ করতে আসে শাপলা আক্তার ইনাতগঞ্জে তাদের ভাড়াটিয়া বাসায়। মামলায় আরো উল্লেখ্য যে, আসামীদের সাথে পূর্ব পরিচিত হওয়ায় আমার মেয়ে আসার পর থেকে তার ২/৩ দিন আমার বাসায় আসে ও খুজ নিয়ে চা- নাস্তা করে চলে যায়। এতে আমার মেয়ের উপর তাদের কু-নজর পড়ে ঘোলডুবা গ্রামের মৃত হীরা মিয়ার পুত্র ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ (৪০), পিরোজপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র অজুদ মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র রিপন মিয়া (৩০) এর কিন্তু আমরা তা কখনই বুঝতে পারিনি। আমি গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ্য। আমার মেয়ে আসার পর তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমি গত ২৫শে জুন শুক্রবার বিকাল অনুমান ৪টার সময় নবীগঞ্জ ডাক্তার দেখাতে রওনা দেই। নবীগঞ্জ চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পথিমধ্যে চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ আমাকে রাস্তায় পেয়ে জিঞ্জাসা করেন যে, এখন কোথায় যাচ্ছো? আমি বলি- আমি কয়েকদিন ধরে অসুস্থ্য তাই নবীগঞ্জ ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। পরে আমি চলে যাই। কিন্তু তারা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমার বাসায় গিয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। এতে আমার মেয়ে দরজা খুলে দিলে তারা বাসায় প্রবেশ করে আমার মেয়েকে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে জোরপূর্বক তারা পালাক্রমে ধর্ষন করে। আমি যখন ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় আসি তখন রাস্তায় আবার দেখা হয় চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ ও আরো দুইজনকে। তাদেরকে জিঞ্জাস করলাম কোথায় গিয়েছিলেন? তারা কোন উত্তর না দিয়ে আমাকে পাস কাটিয়ে চলে যান। পরে আমিও আমার বাসার উদ্দ্যেশে রওয়ানা হই। বাসার কাছাকাছি আসা মাত্রই শুনতে পাই হাউমাউ। এবং লোকজনও। দৌড়ে বাসায় গিয়ে দেখি আমার মেয়ের অবস্থা নাজেহাল।

আমাকে দেখে আমার মেয়ে গলায় ধরে চিৎকার করে বলতে থাকে মা গ আমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিল। শেষ করে দিয়েছে এমন কথা বলে বলে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে মাঠিতে। আসলে তার মা সহ উপস্থিত সবার কাছে ঘটনার শাপলা ধর্ষনের বিবরন দেয়। এ বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ধর্ষনকারীরা শাপলা ও তার মা যদি ঘর থেকে বের হয় তাহলে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। এতে তারা নিরুপায় হয়ে যান। ধর্ষনকারীদের ভয়ে ৩দিন পর কৌশলে ২৮জুন ২০২১ইংরেজী তারিখে আমার মেয়েকে নিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি ও পরিক্ষা- নিরিক্ষা করাই। এতে আমার মেয়ে কিছুটা সুস্থ্য হলে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে গত ২ জুলাই নবীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেছে তারা বিষয়টি আমলে না নিয়ে কোর্টে মামলার করার পরমর্শ দেন। এতে মহামারি করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গত ১৮ জুলাই রবিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০০০ ইংরেজী (সংশোধীত/২০০৩) ইংরেজী ৯ (১) ধারায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী বাদীর অভিযোগ ও জবানবন্ধি পর্যালোচনা করে আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে উক্ত ধারায় এফ.আই.আর মামলা রুজু সংক্রান্ত প্রতিবেদন অত্র ট্রাইব্যুনালে প্রেরনের জন্য হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের মাধ্যমে নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমেদ এর নিকট পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, মামলার বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, ধর্ষণ মামলার বাদী পেয়ারা বেগম তার স্বামী সাকিল মিয়াকে আসামী করে বেশ কিছুদিন পূর্বে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়টি আমি জানতে পেরে উভয় পক্ষের বিরোধ মীমাংসার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং আপোষে নিস্পত্তি করার জন্য তারা উভয় পক্ষ মতামতও দেয়। শালিস বিচারে উভয় পক্ষ বিষয়টির সমাধানও করা হয়। কিন্তু পেয়ারা বেগম পরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেননি। এ ঘটনার খবরে দেশ- বিদেশে চলছে চুল ছেড়া বিশ্লেষণ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন