জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
আগামী ৮ আগস্ট থেকে ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু করে গণহারে করোনাভাইরাস টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এনআইডি না থাকলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশপত্র নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দিতে পারবেন। এছাড়া টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশের প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুযায়ী একটি, দুইটি বা তিনটি করে টিম নিয়োজিত রাখা হবে।
এর আগে ১৮ বছর বয়সীদের করোনা টিকা পাওয়া নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সম্প্রতি একটি পোস্ট দেন। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এনআইডি না থাকলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশপত্র নিয়ে টিকা দিতে পারবেন।
তবে সুপারিশপত্রটি শুধু টিকার জন্য আলাদা কিছু হবে কি-না, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি প্রতিমন্ত্রী পলক। তিনি বলেন, এ ফরম্যাটের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বলতে পারবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এনআইডি যাদের নেই, তাদের টিকা কীভাবে হবে এবং অনলাইনে নিবন্ধন করতে যারা পারছেন না, তারা কীভাবে টিকা পাবেন, সে বিষয়ে তারা পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, নিবন্ধনের কারণে যেন টিকা থেকে কেউ বঞ্চিত না হন, এটা যখন বলা হল, তখন ডিজিটাল নিবন্ধনের পদ্ধতিকে সমন্বয় করে নেওয়ার জন্য আইসিটি বিভাগ পরামর্শ দেয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে, অন দ্য স্পট, অর্থাৎ কেন্দ্রে গিয়েই নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যার স্মার্টফোন নেই, ইন্টারনেট-সুবিধা অথবা প্রিন্টিংয়ের সুবিধা নেই, তারা কেন্দ্র গিয়ে এনআইডি দেখালে সেখানে নিবন্ধন করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে টিকার কার্ডও আলাদা করে নিতে হবে না। কেন্দ্রেই একটি কার্ড থাকবে। সেখানে নাম-ঠিকানা, টিকার তারিখ, কোন টিকা এবং পরবর্তী টিকার তারিখ উল্লেখ থাকবে। টিকার পরে কার্ড দিয়ে দেবে। তবে এভাবেই টিকা দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
করোনা প্রতিরোধে দুই ডোজ টিকা নেওয়া হলে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এনআইডি ছাড়া টিকা নিলে টিকার সার্টিফিকেট পাওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, শুধু বিদেশ যাওয়া বা ধনীদের জন্য সার্টিফিকেট দরকার, বিষয়টা তা নয়। ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন। আমরা উন্নত জীবনযাত্রা উপহার দিতে চাই। কেউ টিকা নিয়েছে কি না, তা সার্টিফিকেট থাকলে বোঝা যাবে। ডিজিটালি সম্ভব না হলে হার্ড কপি দিতে হবে। যেভাবে অন্যান্য টিকার ক্ষেত্রে দেওয়া হয়।
সরকার থেকে জানানো হয়েছে, টিকা পরিকল্পনায় সারাদেশে ১৩ হাজার ৮০০ ওয়ার্ড, সিটি করপোরেশনের ৪৩৩টি ওয়ার্ড, পৌরসভার এক হাজার ৫৪টি ওয়ার্ডসহ মোট ১৫ হাজার ২৮৭ ওয়ার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রাম ও পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে টিকা দেওয়ার জন্য একটি করে টিম রাখা হবে। আর সিটি করপোরেশন এলাকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে তিনটি করে টিম থাকবে। গ্রাম ও পৌরসভা এলাকায় চারদিন এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ছয়দিন টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। গ্রাম, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মোট ১৫ হাজার ২৮৭টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ২০০ ডোজ করে মোট এক কোটি ৩৪ লাখ ৪২ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
আরো জানানো হয়, সারাদেশে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মীদের মাধ্যমে প্রচারাভিযান (ক্যাম্পেইন) চালানো হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যমান সাব-ব্লক অনুযায়ী টিকাদান সেশন পরিচালিত হবে। সারাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তিন কোটি ডোজ টিকা সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে।
দিনে এখন চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করছেন। আর টিকা দেওয়া হচ্ছে দুই লাখ জানিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারের কাছে এখন টিকা আছে এবং আরও টিকা আসছে। এখন দিনে যেন ৫০ লাখ নিবন্ধন হলেও সুরক্ষা সাইট তা সামাল দিতে পারে, এমন প্রস্তুতি আছে। প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি আছে। টিকা প্রদানের প্রস্তুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও এটুআইকে বলা হয়েছে, সারা দেশের সাত হাজার ডিজিটাল সেন্টার যেন সব ধরনের সহযোগিতা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন সবাই যেন টিকা পান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন