বুলবুল আহমদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ থেকে ||
সরকার ঘোষিত লকডাউন শেষে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ঈদে কয়েক দিন বিরতি দিয়ে টানা চার মাস ধরে বিধিনিষেধে ছিল দেশ। এতে স্থবির হয়ে পড়েছিল জনজীবন। অবশেষে বুধবার থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে জনজীবন। বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চ চলাচলের পাশাপাশি খুলেছে দোকানপাট- বিপণিবিতান, বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি- বেসরকারি অফিস খোলেছে। বুধবার সকাল থেকে ঢাকা- সিলেট মহা সড়কের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, কর্মজীবী মানুষের স্বাভাবিক ব্যস্ততা। রাস্তাঘাট ও অলিগলিতে দোকানপাট খুলেছে। সিটভর্তি যাত্রী নিয়ে চলছে সব ধরনের গণপরিবহণ। কোনো কোনো পরিবহণে অবশ্য সিটের বেশি যাত্রী তুলতেও দেখা যায়। আগের ভাড়াই চলছে বাস। বিধিনেষেধের আগে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে কমসংখ্যক বাস চলাচল করছে। এদিকে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে অর্ধেকসংখ্যক বাস চলাচল করায় সকাল বেলা গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন যাত্রীরা। এছাড়া সড়কে ব্যাপকসংখ্যক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল করতে দেখা গেছে। রাজধানীর আবদুল্লাহপুর এলাকায় কথা হয় সায়েম শরিফ নামে নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী আলহাজ্ব চাদ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, লকডাউন দেওয়ার পর থেকে আমার ২/৩টি ব্যবসা ছিল, আমি সরকারে আইন মেনে তা বন্ধ করে দিয়ে আজ দোকানপাট খুলেছি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মানুষজন নাই। কসমেটিকস এর পোপাইটার এস এম সাজ্জাত এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারে বিধিনিশেধ মেনে প্রথম থেকেই আমার ব্যবসা বন্ধ করে রেখেছি। আজ লকডাইন খোলার কারনে দোকান খুলললেও কোন কাস্টমার নাই। এ ব্যপারে সুবারি ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আজ সকাল থেকে সুপারি নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বসে আছি। ৭ ঘন্টায় মাত্র ১শ টাকার সুপারি বিক্রয় করেছি। এই লকডাউনের কারনে আমার কয়েক হাজার টাকার সুপারী নষ্ট হয়েছে। যা আমি পূরণ করার মতো নয়। এ ব্যাপারে হাজী কয়লার এর প্রোপাইটার রাসেল আহমদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এতে দিনপর দোকান খোলার পর মাত্র ১ মন কয়লা বিক্রয় করেছি। দুঃখের কথা আর কিতা কইতাম। কর্মচারীর বেতন, দোকান ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল কি ভাবে দিব এই চিন্তায় আমি শেষ। তিনি বলেন, বিধিনিষিধের মধ্যে বেশ কিছু চাকরিজীবীর হোম অফিস ছিল। যাদের সশরীরে অফিস করতে হয়েছে তারা বিভিন্নভাবে অফিসে পৌঁছেছে। কিন্তু আজ থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার কারণে সবাই অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল বের হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহণ অর্ধেক চালুর কারণে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এ ব্যাপারে মওদুদ আহমদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বহুদিন পর বাড়ি থেকে বাইরে এসেছি। আমার ৩/৪টি গাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ ছিল। ঘরের পণ্য কিনতে বাজারে যাচ্ছি। আরিফ হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্টের মালিক ময়নুল ইসলাম নুর'র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারের বিধিনিষেধ মেনে লকডাউনের পর আজ সকালে হোটেল খুলেছি। কিন্তু সকাল থেকে রিমঝিম বৃষ্টির কারনে মানুষ বাজারে না আসায় একে বারে ব্যবসা মান্দা। তবে, অনেকই বলছেন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও ২/৪ দিন সময় লাগতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। গণপরিবহণের পাশাপাশি সকাল থেকেই দোকানপাট, শপিংমল, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও অফিস খোলা দেখা গেছে। তবে, এসব স্থানে ক্রেতার উপস্থিত নেই বলেই চলে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন