জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যে প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সেই প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ জনতা মাশরাফির বাড়ির সামনে জড়ো হন। মাশরাফিও তাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং সমস্যা সমাধানে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাসও দেন।
মাশরাফি বলেন, আমার সাথে ই-অরেঞ্জর যে চুক্তি ছিল ৬ মাসের, সেটা জুলাইয়ের ১ তারিখ শেষ হয়েছে। এখন আজকে সকাল থেকে আমার কাছে অনেকগুলো ফোন এসেছে। আমার পিএস, ওর কাছে ফোন আসে। তারপর আমার মনে হলো কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। তারপর অনেকের সাথে কথা বলছি, তারা বললো তিন চারবার দিনতারিখ দিয়েও পন্যটা দেয়নি। তখন আমি পদক্ষেপ নিয়েছি, যেহেতু আমার চুক্তির মেয়াদ শেষ৷ আইনগত জায়গায় খুব বেশি কিছু করার নেই।
তাহলে কোনো এমন প্রদক্ষেপ নিলেন মাশরাফি? এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই দলনেতা বলেন, কারণ সাধারণ মানুষ আর কিছু না। দেখুন আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলেছি। বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে আমার কথা বলা উচিত বলে আমি মনে করি। এ লড়াইয়ে আমি শেষ পর্যন্ত থাকবো। আমি উনাদের অফিসে গিয়েছে সেখানে মালিককে পাইনি৷ তবে তিনটা নাম্বার যোগাড় করেছি৷ ওই নাম্বারগুলোতে অহরহ ফোন দিয়ে যাচ্ছি পাচ্ছি না। শেষে উনাদের সিইও আমান উল্লাহ সাহেব। উনার সাথে কথা হলো। উনি আমাকে বললো যে উনাদের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। ১৯ তারিখ থেকে ডেলেভারি দেওয়া শুরু করবে। এরপর তো আর বেশি কিছু বলার থাকে না।’
প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে তিনি বলেন, সাধারণত যখন চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সিইও এসে চুক্তি করে। আমার অ্যাজেন্ট নাফিসের মাধ্যমে সাজু ভাই যিনি নাটক করে উনি এসেছিলেন। এরপর চুক্তি করেছি।
এর আগেও একটি প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মাশরাফি। এ নিয়েও কথা বলেন ম্যাশ, এসপিসির সঙ্গে চুক্তি ছিল আমাদের সিসি ক্যামেরা দেবে। সেটাও আমরা এসপির অধীনে দিয়ে দিয়েছি। সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য চুক্তি করেছিলাম। দুই মাসের ভেতর বের হয়ে এসেছি। এরপর উনাকে উকিল নোটিশ দিয়ে মামলা করেছি। আমরা পরে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছি যে আমার চুক্তির সময়ের কেউ যদি অর্থ দাবি করে, তাহলে দিতে হবে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর গুলশান-১ এর সড়ক অবরোধ করেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা। অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। গুলশান থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, ৪০ জন গ্রাহক মোটরসাইকেল নিয়ে গুলশান-২ মোড়ে আসেন। পরে তারা সেখান থেকে গুলশান-১ এর দিকে চলে যান।
ই-অরেঞ্জের এক গ্রাহক বলেন, আমরা ই-অরেঞ্জ নামের ই-কমার্স সাইট থেকে বাইক, মোবাইলসহ নানা পণ্য অর্ডার করেছিলাম। আমরা সরকারের ই-কমার্স নীতিমালা প্রকাশের আগে ই-অরেঞ্জের ডাবল টাকা ভাউচার কিনেছিলাম। কর্তৃপক্ষ গত ১৬ মে (সম্ভাব্য তারিখ) থেকে সব ডেলিভারি বন্ধ রেখেছে। ১৮ জুলাই ই-অরেঞ্জ একটি ডেলিভারি ডেট প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে লকডাউনের দোহাই দিয়ে ডেলিভারি বন্ধ করে দেয়। পরে জানায় লকডাউন শেষ হলে ডেলিভারি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। লকডাউন শেষ হওয়ার আগের দিন ১০ আগস্ট তারা আবার নতুন করে ১৬ আগস্ট ডেলিভারির তারিখ প্রকাশ করে।
সোমবার ই-অরেঞ্জ তাদের অফিসিয়াল পেজে জানায়, পূর্বের বাইক সেলারের সঙ্গে তারা চুক্তি বাতিল করেছে। তারা নতুন সেলার পেতে বা নিজেরা বাইক ইমপোর্ট করতে ৪৫-৬০ কর্মদিবস লাগবে। তাই যারা বাইক নিতে চান, তাদের অপেক্ষা করতে হবে অথবা রিফান্ড রিকুয়েস্ট করতে হবে। বেশ কয়েকজন গ্রাহক রিফান্ড চেয়ে ফোন করায় তারা ২১ কর্মদিবসের কথা বলে। তখন সরকার নির্ধারিত ১০ দিনের কথা বলায় তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তাই গ্রাহকরা সড়কে অবস্থান নেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন