মৌলভীবাজারের কামালপুর ইউনিয়নের জাদুশিল্পী সুমন (২৮) নামের এক যুবক ফেইসবুক লাইভে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার (১৬ আগস্ট) রাত ১১ টা ৩০ মিনিটে নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে 'আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়' বলে আত্মহত্যা করেন। তিনি কামালপুর ইউনিয়নের থানা বাজারের গয়ঘর গ্রামের মৃত শহিদ মিয়ার ছেলে।
সুমন পেশায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক। পাশাপাশি তিনি জাদুও দেখাতেন। মূলত সিএনজি চালিয়েই সংসার চালাতেন।
সুমন মিয়া আত্মহত্যার আগে ফেইসবুক লাইভে এসে বলেন শুদ্ধ ও আঞ্চলিক ভাষার মিশেলে বলেন, 'আশা করি সব ভালো আছেন। ভালো থাকার কথা। আমার জীবনে চলাফিরাত কেউরে কষ্ট দিয়ে থাকলে আল্লাহর ওয়াসতে মাফ করি দিবা। আমার জীবনে অশান্তির লাগি কেউ দায়ী নায়। আপনারা যারা আমার ভিডিও দেখবা, আমার পরিবারের যারা আছেন, আমার মৃত্যুর লাগি তারা কেউ দায়ী নায়। আমার পরিবার যেন ভালা থাকে সবাই খেয়াল রাখবা।’
নিজে আত্মহত্যা করলেও সবাইকে ভালো থাকার কথা জানিয়ে বলেন- ‘সবার কাছে অনুরোধ, সব ভালা থাকবা সুস্থ থাকবা।'
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার থানা বাজার গয়ঘর গ্রামের জাদুশিল্পী সুমন তার আইডি থেকে লাইভে আসেন। তিনি লাইভে সবার কাছে ক্ষমা চান। এক পর্যায়ে দড়িতে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.মহসিন ভূঁইয়া বলেন, ৬-৭ মাস আগে কিছু জায়গা কিনেন সুমন মিয়া। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে জায়গা বায়না করেন। এই মাসে ৩ লাক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দলিল করা কথা ছিল। যার জায়গা তিনি টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। লকডাউন পরিস্থিতির কারণে কাজ বন্ধ, রোজগারও বন্ধ। যে কারণে টাকা সংগ্রহ করতে পারছিলেন না সুমন মিয়া। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে সুমনের মা ও স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়। মা রাগ করে চলে যান অন্য বাড়িতে।
এসআই মহসিন বলেন, পারিবারিক অশান্তির কারণে গতকাল রাতে ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সুমন মিয়া।
পুলিশ জানায়, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানা থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন