জাপানি মায়ের দুই সন্তানকে হেফাজতে নিয়েছে সিআইডি

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরীফ ইমরান নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে দুই মেয়ে সন্তানকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন জাপানের নাগরিক নাকানো এরিকো। হাইকোর্ট ৩১ আগস্ট দুই শিশুকে হাজির করতে তাদের বাবাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর আগেই দুই শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রোববার বিকেলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিসানুল হক জিসান এ তথ্য জানান।

 

জাপানি নাগরিকের দুই শিশু সন্তান জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে আগামী ৩১ আগস্ট আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাদের এক মাসের জন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

রাজধানীর গুলশান ও আদাবর থানার ওসিকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। সন্তানের অভিভাবকত্ব ও শিশু দুটিকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্বামী শরীফ ইমরানের কাছ থেকে ফিরে পেতে জাপানি চিকিৎসকের করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারা হচ্ছে- জেসমিন মালিকা (১১), লাইলা লিনা (১০) ও সানিয়া হেনা (৭)। এরা তিনজনই টোকিও চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিলেন।

২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরানের সঙ্গে এরিকোর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ২১ জানুয়ারি ইমরান আমেরিকান স্কুল ইন জাপান কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এতে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। এরপর একদিন বড় দুই মেয়ে জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা স্কুল বাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে ইমরান তাদের অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

শিশির মনির বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি শরীফ ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছ থেকে মেয়েদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মেয়েদের নিজ জিম্মায় পেতে আদেশ চেয়ে গত ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। আদালত গত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়েদের সঙ্গে এরিকোর সাক্ষাতের অনুমতি দেন। কিন্তু ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে দুই মেয়েকে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেন। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি ‘মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে’ ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন তিনি।

তিনি বলেন, গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে তাদের মা এরিকোর জিম্মায় হস্তান্তরের আদেশ দেন। এরপর গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন এরিকো। এরপর করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও ইমরান তা অবিশ্বাস করে সন্তানদের সঙ্গে তাকে সাক্ষাতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ২৭ জুলাই এরিকোর মোবাইল সংযোগ বন্ধ করে চোখবাঁধা অবস্থায় মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেন। এ অবস্থায় দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন