বুলবুল আহমদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ- নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের শেরফরাজপুর (ভানুদেব) গ্রামের মৃত হোছাইন মোহাম্মদ ছানাওর এর স্ত্রী সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন স্বপ্না'র সহায় সম্পদ, বাসা বাড়ী জবর দখল করতে একটি ভুমিদস্যু চক্র সক্রিয় হয়ে ইঠেছে। অন্যতায় অর্ধকোটি টাকা চাঁদাদাবী করে আসছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এ ঘটনায় হয়রানির শিকার সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন স্বপ্না বাদী হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করেছেন মামলা নং ১৩৮/২০২১ইং। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটকে৷
মামলার এজাহারে উল্লেখ ও নির্যাতিত অসহায় মহিলা সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন স্বপ্না গতকাল সাংবাদিকদের জানান, তার স্কুল/কলেজ পড়ুয়া ৩ ছেলে ও ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। গত ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর হঠাৎ তার স্বামী আকষ্মিক ভাবে মৃত্যু বরণ করেন৷ তার সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে স্বামীর জীবদ্দশায় তাদের স্ব-পরিবারে সিলেট শহরের শাহ্ পরান (রহঃ) থানার দিগন্ত আবাসিক এলাকায় বসবাস শুরু করেন৷
এদিকে, গ্রামের বাড়ী নবীগঞ্জের দেবপাড়া ইউনিয়নের ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নিকটবর্তী শেরফরাজপুর গ্রামে তার স্বামীর প্রায় ৩৫ কেদার জমি রয়েছে৷ এই জমির আয় থেকেই তাদের সংসার চলে। স্বপ্নার স্বামী পেশায় ছিলেন একজন মাদরাসা শিক্ষক। তিনি মারা যাবার পরপরই তাদের পরিবারের উপর নেমে আসে নানা ঝড়-তুফান, দুঃখ-দুর্দশা ও ভূমিদস্যু চক্র কর্তৃক নানা নির্যাতন। তাদের সম্পত্তির উপর কু-নজর পড়ে একটি ভূমিদস্যু চক্রের। এ খবর পেয়ে স্বপ্নার পরিবারের বিষয়টি জানতে মোবাইল ফোন সহ বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নেন। এবং যারা এসব করছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করার কারণে গত ১৩ এপ্রিল বিকাল অনুমান ৫টায় সিলেট শহরের দিগন্ত আবাসিক এলাকায় দুটি মোটর সাইকেল যোগে ৫/৬ জন সন্ত্রাসী তাদের বাসায় প্রবেশ করে তারই আপন ভাসুর মৃত আব্দুল মোতালেব প্রকাশ লাল মিয়ার পুত্র রুহুল আমীন(৩৫), বদরুল ইসলাম (৩১ ) অজ্ঞাত ৫/৬ জন লোক সহ আরো কয়েক জনের সহযোগিতায় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন স্বপ্নার বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করেন। অন্যতায় তার ছেলে মেয়ে সহ তাদেরকে প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়৷ এসময় তার গৃহ পরিচারিকা মাসুদা বেগম, তার স্বামী চান্দু মিয়া সহ অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসলে তারা নানান হুমকি দিয়ে দ্রুত গতিতে মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যায়৷ এঘটনার পরপরই শাহ পরান (রহঃ) থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করা হয়, জিডি নং ৬১৩৷
উক্ত জিডির খবর পেয়ে আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ফরিদা ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়িতে অবস্থিত ৩/৪ কেদার জমিতে অবৈধভাবে ট্রাক্টর দিয়ে জোরপূর্বক হালচাষ করে এবং বাদীনির কৃষি জমির ৫০/৬০ মন পাকা ধান (বোরো ফসল) তাদের সহযোগী একই গ্রামের মৃত আলকাছ মিয়ার পুত্র সেবু মিয়া সহ ভূমিদস্যুগন মিলে জোর পূর্বক কেটে নিয়ে যায়৷ এঘটনার পর থেকে ভূমিদস্যু চক্রের নানা হুমকিতে তিরি তার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ এব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন স্বপ্না।
তার কলেজ পড়ুয়া বড় ছেলে নাঈম এর সাথে কথা হলে সে বলে, ভুমি দস্যুদের হুমকির ভয়ে আমাদের জন্মস্থান গ্রামের বাড়ীতে বিগত দেড় বছর যাবৎ যেতে পারছিনা৷ আমরা নানান ভয়ে অসহায়দের মতো সিলেট পড়ে আছি, কখন যে কি হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন