প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে, সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের পক্ষ থেকে ২২ আগস্ট ২০২১ সিআরবি’র সাতরাস্তার মোড়ে এক সংহতি সমাবেশ থেকে উপরোক্ত দাবি জানানো হয়। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কর্তৃক সিআরবিকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা করেছে। আবার সরকারের পরিবেশ আইনেও পাহাড় কাটা ও স্থাপনা নির্মান নিষিদ্ধ হলেও রেলওয়ে সে নির্দেশনা অমান্য করে বেসরকারি ব্যবসায়ী গ্রুপ ইউনাইটেড গ্রুপকে হাসপাতাল স্থাপনের অনুমোদন দেন। সরকার যদি পরিবেশ ও হেরিটেজ আইন না মানে তাহলে সাধারণ মানুষ আইনের প্রতি কেন শ্রদ্ধাশীল হবে। আর ব্যবসায়ী গ্রুপরা বিভিন্নভাবে সরকারের নীতি ও আদর্শকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বারবার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস করে নানা কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। যেখানে সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও পরিবেশ বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কাছে দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে তাদের ব্যবসা ও মুনাফাই মুখ্য। ব্যবসায়ীদের কর্পোরেট দুঃশাসন থেকে মুক্তির জন্য এখনই সোচ্চার না হলেও বর্জুয়া গোষ্ঠিরা একটা সময় পুরো দেশকেও বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা অর্জন করবে।
এডাব চট্টগ্রামের সভাপতি ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারুর সভাপতিত্বে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এস নাজের হোসাইন, ইপসার প্রধান নির্বাহী মোঃ আরিফুর রহমান,মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবেশবিদ ডঃ ইদ্রিস আলী, বনফুলের নির্বাহী পরিচালক রেজিয়া বেগম, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আলী শিকদার, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের প্রধান নির্বাহী উৎপল বড়ুয়া, উৎস’র মোস্তফা কামাল যাত্রা, ডিএসকে’র আরেফাতুল জান্নাত, আইডিএফ এর সুদর্শন বড়–য়া, উপকুলের যোবায়ের ফারুখ, অপরাজেয় বাংলাদেশ’র আরিফা খাতুন, সিএসডিএফ জেলা সামাজিক উদোক্তা পরিষদের মোঃ জানে আলম,ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের ঝর্না বড়–য়া, নাসরিন সুলতানা খানম, ক্যাব জামালখানের সালাহ উদ্দীন আহমদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ। সংহতি সমাবেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমুেহর মধ্যে ইলমা, আইএসডিই, ইপসা, মমতা, ক্যাব, ডিএসকে, আইডিএফ, উৎস, স্যুট, ঈশিকা ফাউন্ডেশন, অপরাজেয় বাংলাদেশ, সংশপ্তক, দৃষ্টি, মনীষা, উপকূল, প্রত্যয়, আইসিজেডএম, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদ, প্রজন্ম চট্টগ্রাম, সিএসডিএফসহ প্রায় শতাধিক এনজিও সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিগন অংশগ্রহন করেন।
সভায় বক্তারা আরও বলেন বলেন যতদিন পর্যন্ত সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মানের সিদ্ধান্ত বাতিল না হবে ততদিন পর্যন্ত এ আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। চট্টগ্রাম শহরে রেলওয়ের অনেক জায়গা খালি থাকলেও সিআরবির বিশাল পাহাড় দখলের অসৎ উদ্দেশ্যে এখানে হাসপাতাল নির্মানের সিদ্ধান্ত নেন। এখানে ইউনাইটেড গ্রæপের কোন ভালো উদ্দেশ্য নাই। খুলসী ঝাউতলা, বন্দর পতেঙ্গা, হালিশহর ও ভাটিয়ারীতে বিপুল সংখ্যক পরিত্যক্ত জায়গা থাকার পরও রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিআরবি দখলে অংশ হিসাবে এই হাসপাতাল নির্মানের প্রক্রিয়া শুরু করে। সরকার যদি প্রকৃত অর্থে হাসপাতাল নির্মান করতে চায়, তাহলে দক্ষিন চট্টগ্রাম ও বন্দর-পতেঙ্গা এলাকায় হাসপাতালের বিপুল চাহিদা, সেখানে স্থাপন করা যেতে পারে বলে বক্তরা মত প্রকাশ করেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন