জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত ক্রীড়ানুরাগী। ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে থাকেন। বিশেষ করে অসুস্থ এবং প্রয়াত ক্রীড়াবিদদের পরিবারের খোঁজখবর রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি প্রয়াত তারকা ফুটবলার ও বিশিষ্ট সংগঠক বাদল রায়ের পরিবারের জন্য একটি ফ্ল্যাট ও আর্থিক অনুদান মঞ্জুর করেছেন তিনি। আগামী কিছুদিনের মধ্যে এই ফ্ল্যাট ও অর্থ বাদল রায়ের পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এসব তথ্য জানান বাদল রায়ের দীর্ঘদিনের বন্ধু সাবেক তারকা ফুটবলার আবদুল গাফফার।
২০১৭ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন বাদল রায়। সর্বশেষ করোনা এবং লিভার ক্যান্সারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান বাদল। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গত বছর ২২ নভেম্বর দুনিয়া ত্যাগ করেন ক্রীড়াঙ্গনে সবার প্রিয় বাদল রায়।
বাদল রায়ের একমাত্র মেয়ে গঙ্গোত্রী রায় (বৃষ্টি) অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। প্রধানমন্ত্রী তার বাবার প্রতি ভালোবেসে তাদের পরিবারের পাশে পুনরায় দাঁড়ানোয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে, ‘মাননীয় প্রধনামন্ত্রীকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার বাবার প্রতি তাঁর অসম্ভব ভালোবাসা আমরা সবসময় অনুভব করি। বাবা সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব অনুসরণ করে চলেছেন। ২০১৭ সালে ব্রেন স্ট্রোকের সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে সিঙ্গাপুরে বাবার চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে।’
বাদল রায়ের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর এই সাহায্যের জন্য কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু সাবেক তারকা ফুটবলার আবদুল গাফফার। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক গাফফার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় ক্রীড়াবিদদের পাশে থাকেন। বাদল তার খুবই প্রিয় একজন ছিলেন। হারুন ভাই (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক) বাদলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে আমি বিষয়টি সমন্বয় করেছি।’
বাদল রায় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের বিশেষ এক নাম। সত্তর-আশির দশকে তারকা ফুটবলার। ১৯৮১ সালে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন। খেলা ছাড়ার পর ক্রীড়া সংগঠন ও রাজনীতির সঙ্গেই ছিলেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে তার নিজ জেলা কুমিল্লা থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া কমিটির সহসম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ছিলেন বেশ কয়েকবার। ক্রীড়াঙ্গনের সাথে বাদলের ছিল নাড়ির সম্পর্ক। ফুটবল ফেডারেশন ছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া কল্যাণসেবী ফাউন্ডেশন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে তিনি ছিলেন। ক্রীড়াঙ্গনে তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর।
বাদল রায় ছাড়াও ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্রাদার্সের ফুটবলার ও সাবেক জাতীয় অধিনায়ক সহিদউদ্দিন সেলিম, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য সুভাষ সাহা, ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সাহায্য পাচ্ছেন।
ক্রীড়াবিদদের প্রধানমন্ত্রীর সাহায্যের বিষয়টি সার্বিকভাবে তুলে ধরে আবদুল গাফফার বলেন, ‘বাদলকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি ফ্ল্যাট দিয়েছেন। সেই ফ্ল্যাটটি মিরপুর ১৪ নম্বরে। ফ্ল্যাটের পাশাপাশি বাদলের পরিবার ২৫ লাখ টাকাও পাবে। সুভাষ দা (স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য) ৩০ লাখ, সেলিম ভাই (ব্রাদার্সের সাবেক ফুটবলার) ১০ লাখ এবং সাব্বির (ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্সের সাবেক সম্পাদক) ৫ লাখ টাকা পাবেন। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী দেশে আসার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে অসুস্থদের এবং বাদলের পরিবারের হাতে চেক হস্তান্তর হবে। আরেক সাবেক জাতীয় ফুটবলার আজমতের সাহায্যের জন্যও প্রক্রিয়া চলছে। আজমত গাজীপুরে খুব অসুস্থ অবস্থায় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন