ফুলবাড়ীর প্রতিরোধ চেতনায় বাংলাদেশকে নতুন দিশা দিতে হবে : কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন


ঐতিহাসিক দিবসে শহীদ তরিকুল, সালেকিন, আল আমিন; বীর যোদ্ধা বাবলু রায়, প্রদীপ, শ্রীমণ বাস্কেসহ অগণিত সংগ্রামী মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের আহ্বায়ক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও সমন্বয়ক কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া বলেছেন, মানুষের ঐক্য ও অবিরাম প্রতিরোধ উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশকে রক্ষা করেছে, নদী-কৃষিজমি-ভূগর্ভস্থ পানির আধারকে এক অকল্পনীয় বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেছে। ফুলবাড়ীর প্রতিরোধ চেতনা দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন দিশা দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) ফুলবাড়ী দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃত্রয় এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর সেদিন পুলিশ ও বিডিআর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় তিন জন, আহত হয় দুই শতাধিক। ঘটনার ১৪ বছর পার হয়ে গেলেও সরকারের সাথে সম্পাদিত ফুলবাড়ীবাসীর সেই ৬ দফা চুক্তি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।  

নেতৃবৃন্দ বলেন, উন্নয়নের নামে প্রাণ-প্রকৃতি-সম্পদ, জনস্বাস্থ্য-জনজীবন ও জীবিকার বিপরীতে মুনাফা-অন্ধ তৎপরতায় বিশ্বের বাস্তুসংস্থান, নদী-সমুদ্র-জলবায়ু আক্রান্ত। এই ধারায় বিশ্ব চলতে থাকলে সামনে আরও ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে। বাংলাদেশের জন্য বিপদ হবে আরও বেশি। তাই যেসব প্রকল্প প্রাণ প্রকৃতি, জনস্বাস্থ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করে মুনাফার বদলে মানুষকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি উঠেছে বিশ্বজুড়ে। ফুলবাড়ী আন্দোলন এই দাবিতেই গণঅভ্যুত্থান তৈরি করেছিল, আর বুকের রক্তে, সংগ্রামে ১৫ বছর ধরে প্রতিরোধ জাগ্রত রেখেছে।

তারা আরো বলেন, ২০০৬ সালে বেনিয়া কোম্পানী এশিয়া এনার্জির থাবা থেকে ফুলবাড়ীর কয়লাসম্পদ রক্ষায় ফুলবাড়ীর শহীদেরা জীবন দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছে। ২০০৬ সালে বুকের রক্ত দিয়ে এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুনাফাখোর এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু ফুলবাড়ীর কয়লাসম্পদ নিয়ে এখনও তাদের চক্রান্ত শেষ হয়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে যে চুরি হয়েছে এখনও তার বিচার হয়নি। এখনও ৬ দফা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। সরকার সে ব্যাপারে নির্বিকার। সেই সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ দফা চুক্তি ও ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ঘটনার ১৫ বছর যার মধ্যে ১৩ বছরই শেখ হাসিনা ক্ষমতায়। কিন্তু এখনও ৬ দফা দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। এখনও এশিয়া এনার্জি অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

তারা আরো বলেন, ফুলবাড়ীকে রক্ষা করতে আন্দোলনে মানুষ বুকের তাজা রক্ত দিয়েছিল। কিন্তু এখনও এশিয়া এনার্জি চক্রান্ত করছে, মামলা দিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে আবারও এলাকার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

নেতৃবৃন্দ ফুলবাড়ীর অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের রক্তভেজা পথে জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন