জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের লাশ আনতে ভারতের নাগপুরে যাবে বিমানের বিশেষ একটি ফ্লাইট। তবে ফ্লাইটটি কবে কখন নাগপুর যাবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার সন্ধ্যায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত রয়েছে (৩ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হবে)। এ কারণে ক্যাপ্টেনের লাশ আনতে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে। ক্যাপ্টেন নওশাদের মৃত্যুর পর হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটের অপেক্ষায় ছিলো বিমান। সেই সার্টিফিকেটের কপি ঢাকায় আসার পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চেয়েছে বিমান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। সোমবার মধ্যরাত অথবা মঙ্গলবার সকালে আনা হতে পারে লাশ। বিমানবন্দরে তাকে সম্মাননা জানাবেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম- জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সব মসজিদে ক্যাপ্টেন নওশাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও বিমানের পক্ষ থেকে তার মরদেহ দেশে আনতে প্রয়োজনীয় সকল কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন নওশাদের অকাল মৃত্যুতে বিমানের এমডি ও সিইও ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালসহ বিমানের সকল স্তরের কর্মীরা গভীরভাবে শোকাহত। বিমান ক্যাপ্টেন নওশাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাচ্ছে।
শুক্রবার মাসকাট-ঢাকা রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শিডিউল ফ্লাইট বিজি ০২২ মোট ১২৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসার পথে পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে। এর পর নাগপুরের ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তাকে ভর্তি করা হয়। শনিবার রাতেই নওশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তাকে লাইফসাপোর্টে নেওয়া হয়। মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিনি ‘কোমায়’ চলে যান।
ক্যাপ্টেন নওশাদ ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ হলেও স্বজনরা লাইফসাপোর্ট খুলে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর লাইফসাপোর্ট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তারা। এরপর সোমবার তার লাইফসাপোর্ট খুলে দিয়ে নওশাদকে মৃত ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে এস-২০৮ উড়োজাহাজে ফাস্ট অফিসার পদে যোগ দেন। সেখান থেকে এয়ারবাস সি ৩১০-এ ফাস্ট অফিসার হিসেবে প্রমোশন পান। এর পর ৭৭৭-৩০০ সিআর উড়োজাহাজের ফাস্ট অফিসার হিসেবে পদোন্নতি পান। পরে সি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজেরর ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান। তিনি বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। পাইলট নওশাদের বাসা উত্তরাতে। নওশাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে আমেরিকাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে থাকে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন