প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পরীক্ষা নিষিদ্ধ করলো চীন

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

স্কুলে ছয় ও সাত বছর বয়সী শিশুদের কোনো লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। চীন সরকার সম্প্রতি এ নির্দেশনা জারি করেছে। মূলত অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করছে চীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ছয় ও সাত বয়সী শিশুদের জন্য পরীক্ষা না রাখা, এ লক্ষ্যে ধারাবাহিক পদক্ষেপেরই একটি অংশ।

চীনে সাধারণত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম বছর থেকেই শিশুদের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরপর ১৮ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত তাদের প্রচুর পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।

 

কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, এই ব্যবস্থাটি শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার জন্য পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু এটা নিয়ে কিছু বিদ্যালয়ের সমস্যা আছে। যেমন, তারা অতিরিক্ত পরীক্ষা নেয়। এটি শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে অতিরিক্ত বোঝা হয়ে যাচ্ছে। এটা অবশ্যই সংশোধন করতে হবে।

প্রতি শিক্ষাবর্ষে নির্বাচনী ও মূল পরীক্ষার সংখ্যাও সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে কাগজে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার দরকার নেই। অন্যান্য শ্রেণীর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতি সেমিস্টারে একটি করে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারে। জুনিয়র হাইস্কুলে মিডটার্ম (অর্ধ সাময়িকী) পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে কোনো ধরনের আঞ্চলিক বা আন্তঃস্কুল পরীক্ষার আয়োজন করা যাবে না।

নন-গ্র্যাজুয়েট জুনিয়র হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিত নির্বাচনী পরীক্ষা, ইউনিট পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা ইত্যাদি নেওয়া যাবে না। বিভিন্ন একাডেমিক রিসার্চের নামে নানা মোড়কে পরীক্ষা নেওয়া নিষেধ।

সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে অবশ্য চীনের সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ওয়েবোতে অনেকে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এতে শিশুদের ওপর চাপ কমবে। কিন্তু অন্যরা প্রশ্ন করছেন, পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই করা হবে কীভাবে?

চীন অনেক দিন ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা বলছে। গত জুলাই মাসে দেশে কার্যরত সব অনলাইন টিউটোরিং কোম্পানি বন্ধ করা হয়েছে। এগুলো বাংলাদেশে কোচিং সেন্টারের মতো ব্যবসা করতো।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এই কোচিং বাণিজ্যে বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধের কথাও বলা হয়েছে। সরকারের অভিযানের আগে এই শিল্পের আকার ছিল ১২০ বিলিয়ন ডলার।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় চলতি বছর প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক দেওয়াও নিষিদ্ধ করেছে। আর জুনিয়র হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ছোট আকারে হোমওয়ার্ক দিতে বলেছে। বলা হয়েছে, রাতের বেলা দেড় ঘণ্টায় শেষ করা যাবে এমন হোমওয়ার্ক দিতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন