জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
রাজধানীর কাঁঠালবাগানে একটি ভবনের ৯তলার বারান্দা থেকে ‘লাফিয়ে পড়ে’ সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শহিদুল ইসলামের ছেলে ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদের (৩৩) মৃত্যু হয়েছে। তবে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শহিদুল। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কলাবাগান থানাধীন কাঁঠালবাগান ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের ১৬৩ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
সংকটাপন্ন অবস্থায় অবস্থায় আসিফকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসিফ সিরাজগঞ্জ কামারখন্দ বাগবাড়ী এলাকার অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম খানের ছেলে। শহিদুল ইসলাম ১৯৮৬-৯০ মেয়াদে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি কামারখন্দ) আসনের জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।
জানা গেছে, ব্যারিস্টার আসিফ নেশা করতেন। তিন মাস রিহ্যাবে চিকিৎসাও নিয়েছিলেন। তার স্ত্রী সাবরিনা শাহিদ নিশিতা। তাকে প্রেম করে বিয়ে করেন আসিফ। এই বিয়ে মেনে নেয়নি তার পরিবার। এ কারণে বাবাসহ পরিবার মিরপুরে থাকলেও স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির বাসায় থাকতেন আসিফ।
আসিফের শ্যালক সাইমন শাহিদ নিশাদ জানান, চার বছর আগে আসিফ তার বড় বোন সাবরিনা শাহিদ নিশিতাকে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে করেন। তবে আসিফের পরিবার এটি মেনে নেয়নি। এজন্য আসিফ কাঁঠালবাগান শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। তাদের কোনো সন্তান নেই।
তিনি বলেন, ‘আসিফ ও সাবরিনার সঙ্গে মাঝেমধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া হতো। আসিফ মাদকাসক্ত ছিলেন। চার মাস রিহ্যাবেও ছিলেন তিন।’
নিশাদের ভাষ্য, গতরাতে আবারো স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে আসিফ ৯ তলার বারান্দা থেকে রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়েন। আসিফকে উদ্ধার করে প্রথমে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ভোরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে ভোর সাড়ে ৫টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, আসিফ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। মতিঝিলে দেশ ট্রেডিং করপোরেশনের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ছিল। আসিফ তার শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনই ভোরে খবর দেয় আসিফের অবস্থা ভালো না, তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পরে এখানে এসে আসিফকে মৃত দেখতে পাই। আমাদের সন্দেহ আসিফকে মেরে ফেলা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করতে পারে না।’
আসিফের বাবা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার কারণ জানার জন্য কলাবাগান থানা পুলিশ কাজ করছে।
কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র জানান, খবর পেয়ে আমরা বাসায় গিয়ে নিহতের বাবা-স্ত্রীসহ স্বজনদের বক্তব্য শুনি। স্ত্রীর ভাষ্য আসিফ মাদকাসক্ত ছিলেন, এসব নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। আসিফ রাতে বারান্দায়ই বসা ছিলেন। শেষ রাতে ৯ তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন।
ওসি বলেন, মৃত ব্যক্তির বাবার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। আসিফের গায়ে স্পট পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কী কারণে লাফিয়ে পড়েছেন তা তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন